মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কয়েক মাস পরই প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির অনুগতরা এ ছায়া সরকার প্রতিষ্ঠা করে। একই সঙ্গে নিজস্ব সেনাবাহিনী পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে একটি সশস্ত্র বাহিনীও গঠন করা হয়। সেই থেকে মিয়ানমার জান্তা সরকারকে উৎখাতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এনইউজি।
সরকার গঠনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে এনইউজি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত এক বছর ধরে লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে মিয়ানমারের অর্ধেকের বেশি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে তাদের সশস্ত্র বাহিনী পিডিএফের যোদ্ধারা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংগঠন আসিয়ানের প্রথম কোনো সদস্য হিসেবে এনইউজির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রকাশ্যে বৈঠক করল মালয়েশিয়া।
মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন এনইউজির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউ মো জ উ, এনইউজি’র পার্লামেন্ট বিষয়ক কমিটি ‘কমিটি রিপ্রেজেন্টিং পিদংশু হ্লুত্তাও (সিআরপিএইচ)-এর চেয়ারম্যান ইউ অং কি নয়ান্তের সঙ্গে বৈঠক করেন মালয়েশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে এনইউজির নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত উন ইউ কিয়াও মো তুন ও এনইউজি’র আরও দুই মন্ত্রী ইউ অং মিও মিন ও ইউ তিন লিন অং।
বৈঠক শেষে এক টুইটার বার্তায় মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, এনইউজি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মিয়ানমারের চলমান ঘটনাবলির সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে এনইউজির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড জিন মার অংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন শুরু হয়। এবারের অধিবেশনে মিয়ানমার পরিস্থিতিকে মূল আলোচ্য করে আরও বেশ কয়েকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ফর ফরেইন অ্যাফেয়ার্সের বৈঠক ও ওআইসি কনট্যাক্ট গ্রুপ অন রোহিঙ্গা মুসলিমস অব মিয়ানমার বিষয়ক বৈঠকসহ একাধিক বৈঠক রয়েছে।
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জাতিসংঘ অধিবেশনকালে এসব বৈঠকে মিয়ানমারের জনগণের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিনিধির মুখ থেকে মিয়ানমারের চলমান সবশেষ পরিস্থিতি শুনবে মালয়েশিয়া। একই সঙ্গে সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া কিভাবে সহযোগিতা করতে পারে সেটাও আলোচনা করা হবে।