দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়নের মুকুট এনে দিয়েছেন সাবিনারা। তাদেরকে রাজসিক সংবর্ধনা দিতে সকল প্রস্তুতিও সেরে নিয়েছে বাফুফে ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সানজিদা-মারিয়ারা অবশ্য পাচ্ছেন না কোনো আর্থিক পুরস্কার। তবে সামর্থ্য থাকলে সাফজয়ী দলের সবাইকে ২ কোটি টাকা করে দিতে বলে জানান, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন।
বাফুফে ভবনে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে কোনো উপহার দেয়া হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, ‘অনেক ভালবাসা আর অভিনন্দন। আমিতো চাই প্রত্যেককে ২ কোটি টাকা করে একবারে দিয়ে দিতে। আমার কাছে থাকলে আমি দিয়ে দিতাম। আমি চেষ্টা করতেছি টাকা আনতে। আনতে পারলে ওদেরকেই দেব। টাকা আনতে পারলে মেয়েদের দেব। কারণ মেয়েদের যত দেব, আমি তত পাব।
২০০৩ সালের পর থেকে সাফে ব্যর্থ বাংলাদেশের পুরুষ দল। সেখানে ২০১০ থেকে শুরু হওয়া সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ষষ্ঠ আসরেই সফল নারী দল। ২০২২ সালে এক ঝাঁক তরুণ ফুটবলারকে নিয়ে তারা দেশকে এনে দিয়েছে এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। পুরুষদের ব্যর্থতার ভিড়েও সফল নারীরা। তবুও তাদেরকে দেয়া হয় না যথাযথ অর্থ সম্মান।অন্যদিকে দীর্ঘ সময় কোনো ফল আনতে না পারলেও চড়া বেতন পাচ্ছেন পুরুষ দলের ফুটবলাররা।
নারীদের বেতন বৈষম্য নিয়ে প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেন ছেলেদের ফুটবলে বেতন অনেক বেশি মেয়েদের কম কেন। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের সমান বেতন তো হতে পারে না পৃথিবীতে। এমবাপ্পে সাইনিং পায় ৩০ মিলিয়ন আর মেয়েদের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার পায় ৪ মিলিয়ন। এখানে পার্থক্য থাকবেই।’
তবে মেয়েরা যে একেবারে আয় করছে না, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন বাফুফে সভাপতি। সাবিনা-সানজিদাদের ধীরে ধীরে আর্থিক আর্থিক উন্নতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই মেয়েরা যখন প্রথম আসছে মেয়েদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। আজকে মেয়েদের কাছে বাসায় দুইটা তিনটা টিভি, চারটা মোবাইল, ব্যাংক-ব্যালেন্স, জমি আছে। এগুলা ফুটবল খেলে হয়েছে। এই ইমপ্যাক্টটা ওরা দেখছে। ওদের দেখাদেখি নতুন মেয়েরাও আসবে।’
মেয়েদের বেতনের বাইরে খাওয়া, কোচিং স্টাফদের বেতন, খেলোয়াড়দের সরঞ্জাম, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার খরচ মিলিয়ে বাফুফের খরচ বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকা। এর সবটায় আসে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকে। সামনে আরও ভালো স্পন্সর পেলে মেয়েদের বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়বে বলেও জানান সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পন্সর থেকে এখন যে অর্থ পাচ্ছি সেটা দিয়ে মেয়েদের ভালোভাবে দেখভাল করছি। সামনে যদি আমরা আরও ভালো স্পন্সরশিপ অ্যামাউন্ট পাই নিশ্চয়ই ওদের বেতন, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হবে। ’