বরিশালে প্রথমবারের মতো স্থাপন করা হয়েছে পোশাক তৈরির কারখানা। সেই সঙ্গে বোতলজাত পানি শোধনাগার গড়ে তোলা হয়েছে। নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। মূলত পদ্মা সেতু চালুর পর পাল্টে যাচ্ছে বরিশালের অর্থনীতির গতিপথ।
নেমর্যাক ডিজাইন গার্মেন্টস হচ্ছে বরিশালের প্রথম পোশাক তৈরির কারখানা। বিসিক এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণের পর এখন যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কারখানাটি আগামী ৩ মাসের মধ্যেই উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নেমর্যাক ডিজাইন গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ। আশা করি, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
শুধু নেমর্যাক গার্মেন্টস নয়, বিসিক এলাকায় আরও গড়ে ওঠছে শীতবস্ত্রে ব্যবহৃত কমফোর্টার কারখানা। কারখানাটি উৎপাদনে গেলে বিদেশে কমফোর্টার রফতানি করা হবে। এ বিষয়ে বিএনসি হোম টেক্সটাইল লিমিটেডে স্বত্বাধিকারী খায়রুল হাসান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেছে। আমাদের চাইনিজ সহযোগী আছে, যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
এ ছাড়া এখানে বোতলজাত পানি পরিশোধনের কারখানাও হচ্ছে। আসছে নভেম্বরের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে ছাড়ার আগেই এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে মোহিনী মিনারেল ওয়াটার। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ৩ মাসের মধ্যেই পাল্টে যেতে শুরু করেছে বরিশালের অর্থনীতি। শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
মোহিনী মিনারেল ওয়াটারের স্বত্বাধিকারী জামাল হোসেন বলেন, আমরা আগে যে জিনিস ৮ ঘণ্টায়ও ডেলিভারি দিতে পারতাম না, এখন সেটি পাঠাতে ৩ ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। তাই আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি।
বিভিন্ন উদ্যোক্তা বরিশাল বিসিকের প্লট নেয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন বলে জানান বিসিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম খান।
সম্প্রতি বিসিকে ৭৪ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৭ একর নিচু জমি ভরাট করে ১১০টি প্লট করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩০টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বরিশালের বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জলিস মাহমুদ বলেন, বিসিকের দখলে যে সব জমি ছিল সেগুলো অনুন্নত ছিল। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি উন্নত করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের শেষের দিকে এ প্রকল্পটি শেষ হয়ে যাবে। তখন আমরা ৯০টির মতো শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্লট বরাদ্দ দিতে পারব।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে নগরীর কাউনিয়ায় ১৩০ একর জমি নিয়ে বিসিক শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে। বর্তমানে ১৭৩টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে ১১৭টি চলমান।