ছবি সংগৃহীত
ফুটবলে মাঠের খেলায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার অন্যতম অনুষঙ্গ হলুদ ও লাল কার্ড। তবে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে তৎকালীন অন্যতম সেরা রেফারি গ্রাহাম পল সম্ভবত সেই প্রাথমিক নিয়মটাই ভুলে গিয়েছিলেন। তাই তো তিনটি হলদু কার্ডের পর অবশেষে ব্যবহার করেছিলেন লাল কার্ড।
গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপ ‘এফ’-এ দুদলের সামনে সুযোগ রানার্সআপ হয়ে পরের রাউন্ডে জায়গা করে নেয়া। এমন সমীকরণের ম্যাচে স্বাভাবিকভাবে ছিল স্নায়ুর চাপ, ছিল তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তবে সেসব ছাপিয়ে সেই ম্যাচে বাড়তি পারদ যোগ করে গ্রাহাম পলের বিতর্কিত রেফারিং।
দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়ার হ্যারি কিউয়েলকে ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ড পান ক্রোয়েশিয়ার জোসেফ সিমুনিচ। ৮৯ মিনিটের মাথায় আবারও ফাউল করেন সিমুনিচ। দেখা পান দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের। দুই হলুদ কার্ড পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার কথা তার। তবে রেফারি পল লাল কার্ড দেখাতে ভুলে গেলেন। দুই হলুদ কার্ড পেয়েও মাঠে থেকে গেলেন সিমুনিচ।
এরপর গ্রাহাম পলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে পলকে ধাক্কা দেন সিমুনিচ। তখন আরও একবার হলুদ কার্ড দেখিয়ে অবশেষে লাল কার্ড ব্যবহার করেন পল। মাঠ ছাড়তে ইশারা দেন সিমুনিচকে।
এমন অদ্ভূত রেফারিংয়ের পর পল জানিয়েছিলেন ভুল করে নিজের নোটবুকে ক্রোয়েশিয়ান ৩ নম্বর জার্সিধারী সিমুনিচের নাম না লিখে অস্ট্রেলিয়ান ৩ নম্বর জার্সিধারী ক্রেইগ মুরের নাম লিপিবদ্ধ করেন।
তবে পলের এমন স্বীকারোক্তিতে মন ভরেনি ফিফার। এ ঘটনার আগে ফাইনালে দায়িত্ব পালনের দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে ছিল তৎকালীন অন্যতম সেরা পল। এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর ফাইনাল তো দূরের কথা আর কোনো ম্যাচেই দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়নি ফিফা। হতাশ পলকে দুই সহকারীসহ নিজ দেশে ফেরত পাঠায় আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা। নাটকীয় সেই ম্যাচে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে পা রাখার উল্লাসে মাতে অস্ট্রেলিয়া।