ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক যে শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইলনের প্রস্তাবটি বিবেচনা করার জন্য ইউক্রেনীয় জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরটি জানিয়েছে, এ বিষয়ে টুইটারে একটি জনমত জরিপও চালাচ্ছেন জেলেনস্কি। সোমবার (৩ অক্টোবর) এক টুইটার পোস্টে নিজের অনুসারীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন: কোন ইলনকে তারা বেশি পছন্দ করেন, যিনি ইউক্রেনের পক্ষে নাকি যিনি রাশিয়ার পক্ষে। তবে জরিপে বেশির ভাগ উত্তরদাতাই ইলনের প্রথম অবস্থানের সমর্থন করছেন।
গত সপ্তাহে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসানে এক অভিনব পরিকল্পনার কথা জানান মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। এক টুইটবার্তায় ইলন বলেন, ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছে, সেসব অঞ্চলে আবারও গণভোট আয়োজন করা হোক।
‘যেহেতু পশ্চিমারা রাশিয়ার অধীন অনুষ্ঠিত গণভোটের ফলাফল মানছে না, তাই এবার সেটি করা হবে জাতিসংঘের অধীন। এতে ওই এলাকার মানুষই স্বাধীনভাবে বেছে নিতে পারবে যে তারা রাশিয়ার সঙ্গে যাবে না ইউক্রেনের সঙ্গে। ভোটে হারলে রাশিয়া তার সেনা সরিয়ে নেবে।’
ইলনের এ প্রস্তাব নিয়ে কয়েক দিন ধরে বিতর্কে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি থেকে শুরু করে সেই বিতর্কে অংশ নিয়েছে দেশটির পার্লামেন্টও। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক পাল্টা টুইটে সবার কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনারা কোন ইলন মাস্ককে পছন্দ করেন? যে ইলন মাস্ক ইউক্রেনকে সমর্থন করে নাকি যে ইলন মাস্ক রাশিয়াকে সমর্থন করে।
জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, শান্তি শুধু তখনই সম্ভব, যখন রাশিয়া ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের সব অঞ্চল ফিরিয়ে দেবে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করা হবে, তার সব পরমাণু বোমা ধ্বংস করা হবে এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে রাশিয়ার বিচার হবে। জার্মানিতে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূতও ইলন মাস্কের প্রস্তাবের সমালোচনা করেন।
শুধু ইউক্রেনই নয়, ইউরোপীয় নেতারাও মাস্ককে ভর্ৎসনা করতে ছাড়েননি। লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদা টুইটারে বলেন, কেউ যদি ইলন মাস্কের টেসলার চাকা খুলে নিয়ে যায়, তাহলে সে ওই চাকার বৈধ মালিক হয়ে যায় না।
তবে এসব খুব একটা গায়ে মাখছেন না ইলন। সমালোচনার জবাব দিয়ে পাল্টা এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার মতামত কার পছন্দ হলো না-হলো তা নিয়ে ভাবছি না। আমার এই পরিকল্পনা লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। দোনবাস ও ক্রিমিয়ার মানুষেরই উচিত ঠিক করা তারা কার সঙ্গে থাকবে।’