বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২ ম্যাচের সিরিজ খেলছে দুবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের মাটিতে সদ্যই সিরিজ খুইয়ে আসলেও ব্যাটে-বলে দারুণ করেছিল ক্যাঙ্গারুরা। তবে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অল্পের জন্য বেঁচে গেল তারা। ক্যারারায় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে জোড়া ক্যাচ
ছেড়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয় উপহার দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বুধবার (৫ অক্টোবর) দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এক বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। এদিন টস জিতে ক্যারিবীয়দের আগে ব্যাট করতে পাঠায় ক্যাঙ্গারুরা। ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের পেস বোলিং তোপে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান করেতে সমর্থ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে কাইল মেয়ার্স ও লোয়ার অর্ডারে ওডেন স্মিথের নৈপুণ্যে এই চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় তারা।
জবাব দিতে নেমে, ব্যাট হাতে বাকিরা ব্যর্থ হলেও অ্যারন ফিঞ্চ ও ম্যাথিউ ওয়েডের দুটো ইনিংসে ভর করে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ৫৩ বলে ৫৮ রান করে ম্যাচসেরা হন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ফিঞ্চ।
ক্যারারায় আগে ব্যাট করতে নেম শুরুটা ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। স্কোরকার্ডে ১৪ রান যোগ হতেই বিদায় নেন জনসন চার্লস।
এরপর ব্রেন্ডন কিংয়ের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়েন কাইল মেয়ার্স। পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগেই অবশ্য বিদায় নেন কিং। ১২ রান করেন তিনি। এদিন পাওয়ারপ্লেতে ৫৩ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিংয়ের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি মেয়ার্সও। ৩৬ বলে ৩৯ রান করে কামিন্সের শিকারে পরিণত হন তিনি। ৫ চার ও ১ ছয়ে খেলা তার এই ইনিংসটাই ক্যারিবীয়দের পক্ষে এই ম্যাচে সর্বোচ্চ।
অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের দাপটে এ সময়ে টানা উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়ক পুরান মাত্র ২ রান করে ফেরেন স্টার্কের বলে। রোভম্যান পাওয়েলকে ফেরান হ্যাজেলউড।
১৯ রান করে গ্রিনের শিকারে পরিণত হন রেইফার। ১৩ রান করা জেসন হোল্ডারকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন কামিন্স।
১০৬ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে শেষ পর্যন্ত ওডেন স্মিথের ১৭ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৯ উইকেটে ১৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে হ্যাজেলউড ৩৫ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট। মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স যথাক্রমে ৪০ ও ২২ রানের বিনময়ে শিকার করেন ২টি করে উইকেট। ১টি উইকেট নেন ক্যামেরন গ্রিন।
১৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও ভালো হয়নি। দলীয় ১৫ রানে কটরেলের শিকারে পরিণত হন ডেভিড ওয়ার্নার। ৬ বলে ১৪ রান করেন তিনি।
ওয়ার্নারের সঙ্গে উদ্বোধন করতে নামা ক্যামেরন গ্রিনও ১৪ রান করে আউট হয়ে যান। তাকে ফেরান জোসেফ।
রান পাননি মিচেল মার্শও। ৩ রান করে কটরেলের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
এদিন অস্ট্রেলিয়া দেখেছে জোড়া শূন্যের মুখ। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বাজে ফর্ম চলছেই। রানের খাতা খোলার আগেই তিনি ফিরেছেন কারিয়াহর বলে ক্যাচ দিয়ে। আর টিম ডেভিডকে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে প্রথম ডাক উপহার দেন হোল্ডার। ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ধুকছে ক্যাঙ্গারুরা।
টানা উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অবশ্য লড়ছিলেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ম্যাথিউ ওয়েডকে নিয়ে পাল্টা জবাব দিতে থাকেন তিনি। দুজনের ৬৯ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া।
দলীয় ১২৭ রানের মাথায় জোসেফের বলে হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫৮ রান করা ফিঞ্চ। ৫৩ বলে খেলা ইনিংসটিতে ৬টি চারের মার।
ফিঞ্চের বিদায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার হাল ধরেন ওয়েড। শেষ ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১১ রান। প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ওয়েড। তবে পরের বলেই ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সহজ সে ক্যাচ ছেড়ে দেন রেইফার। এক বল পরে জীবন পান মিচেল স্টার্কও, এবার শর্ট থার্ডম্যানে সেটি ফেলেন কাইল মেয়ার্স। শেষ পর্যন্ত ১ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ২৯ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়েড। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ১৭ রানে ২ উইকেট নেন জোসেফ। কটরেলও ২ উইকেট পেলেও খরচ করেছেন ৪৯ রান। এছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন হোল্ডার, কারিয়াহ ও স্মিথ।