নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির ময়দান। সহিংসতা যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝরছে তাজা প্রাণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও সংযত হয়ে সংঘাত পরিহার করতে হবে। সাধারণ ভোটারদের আস্থা অর্জনে তাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান তাদের।
আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মাঠ দখলের মহড়ায় ব্যস্ত প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। কিছুদিন ধরেই মাঠের রাজনীতিতে সরব দেড় দশকেরও বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের ভোটের রাজনীতিতে ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি। আধিপত্য ধরে রাখতে তাই সহিংসতার পথেই হাঁটছে রাজনৈতিক দলগুলো।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, চলতি বছর ৯ মাসে ৩৮৭টি ঘটনায় ৫,৪০০ জন আহত ও ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১৮ জন, বিএনপি ৬ জন এবং রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি এমন ৩৪ জন রয়েছেন।
সংঘাতের পথ বেছে নিলে বিএনপি জনমত তৈরিতে আরও ব্যর্থ হবে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে আরও বেশি সহিষ্ণু হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘সরকারি দলের কথা বলছি, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহিষ্ণুতার অভাব আছে। তবে বিরোধীদল আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গিয়ে একটা পরিবর্তনের কথা বলতে পারত। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতার জায়গা হচ্ছে জনগণকে তারা মোবিলাইজ করতে পারছে না। প্রধান রাজনৈতিক দল যারা, তারা যদি নির্বাচনে আসে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও, তাহলে ভাল হতো। বাস্তবতার নিরিখে আমি কথাটি বলছি।’
আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, শক্তি প্রদর্শনের মহড়া সাধারণ ভোটারের মধ্যে আস্থার সংকট বাড়াবে। যার প্রভাব পড়বে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, একটা নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে যিনি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থায় তার ভোটটি গণণা হবে, সেভাবেই ফলাফল ঘোষিত হবে– এটি সম্ভবত বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না।
সব দলের মধ্যে সহাবস্থানের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চার আহ্বান বিশ্লেষকদের। এ ক্ষেত্রে হাইকমান্ড থেকে থাকতে হবে ছাড় দেয়ার মানসিকতা।