ভোজ্যতেলের বাজারে ক্রেতাদের ভোগান্তির শেষ নেই। গত সোমবার (৩ অক্টোবর) সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু এ ঘোষণার ৫ দিন পেরুলেও বোতলের গায়ে ১৭৮ টাকা রেট লেখা তেল বাজারে ছাড়ছে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান। পুরানো রেটের তেল নতুন দামে বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছে আরেকটি প্রতিষ্ঠান।
বাজারে নতুন দামের তেল সরবরাহ না হওয়ার বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আমরা এখনও ডিলারদের থেকে নতুন দামের সয়াবিন তেল পাইনি। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) তেলের দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু অনেক কোম্পানি এখনও নতুন দামের তেল সরবরাহ করেনি। তেলের দাম বাড়লে রাতারাতি বাজারে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু দাম কমলে বাজারে তেল আসতে সময় লাগে।
এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ৪ থেকে ৫টি প্রতিষ্ঠান নতুন রেটের পণ্য বাজারে ছাড়েনি। শুধু একটি প্রতিষ্ঠান তেল সরববরাহ করেছে। তারা আগের দামের তেল নতুন দামে দিয়ে গেছে। আমরা সেটিই বিক্রি করছি।
এদিকে, কেজিতে ৬ টাকা দাম বাড়ানোর পর উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে চিনির সরবরাহ বাড়াতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ডিলাররা। পাইকারিতে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চিনি ৪ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এবার ভরা মৌসুমেও চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি শুল্ক সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে দুই দফায় কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনে সরকার। এছাড়া জিটুজি ভিত্তিতেও আরও ৮ লাখ ৩০ হাজার টন চাল ও গম আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিকে প্রতিদিনই বাজারে নজরদারি চালাচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা। তারপরও দামের লাগাম হাতছাড়া।
শনিবার (৮ অক্টোবর) মোহাম্মদপুর টাউন হল খুচরা বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, দেদারসে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিকেজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫২ টাকায়।
চালের দামের বিষয়ে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে চালের দাম বাড়ছেও না কমছেও না। এক জায়গায় স্থির আছে। দাম বেশি তাই অল্প কিনি। অল্প খাই।
অপরদিকে আটা ও ময়দার বাজারে আবারও দাম বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে ২ কেজির প্যাকেটজাত আটার দাম ১০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর লাল আটার দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪৮ টাকায় উঠেছে। এছাড়া ময়দার দাম ১০ টাকা বাড়ার আভাস দিয়েছেন বিক্রেতারা।
আটার দাম নিয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, গেল দুই মাস যাবত কোম্পানিগুলো আটা সরবরাহ করছে না। বলেছে, গমের সংকট।