ফাইল ছবি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ দেখিয়েছেন। তিনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য দুনিয়াতে এসেছিলেন। তার প্রতিটি কর্মকাণ্ড ইনসাফ প্রতিষ্ঠার এক অসাধারণ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
রোববার (৯ অক্টোবর) সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নেতারা মহানবীর জীবন ও কর্ম নিয়ে বক্তব্য দেন।
রিজভী বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) আল্লাহ তাওয়ালা বিশেষভাবে পাঠিয়েছিলেন। ছোট বেলা থেকেই তার সব কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হয় যে, তিনি মহানবী হবেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সংগঠক। গোত্রে গোত্রে বিভক্ত আরবের মানুষকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি পৌত্তলিকতা ও মূর্তি পূজার পরিবর্তে এক ঈশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন। আজকে সমাজে তার নমুনা মাত্র নেই। সমাজে চলছে হানাহানি, মিথ্যাচার অন্যায়।
তিনি বলেন, কাবাঘরে কালো পাথর রাখার ব্যাপারে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে যে বিভেদ দেখা দিয়েছিল সেই বিবাদ মহানবী নিরসন করেছিলেন। তিনি চার গোত্রের প্রধানের সমন্বয়ে হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর যথাস্থানে রাখার ব্যবস্থা করেন। এটা শুধু নিছক ঘটনা নয়। এখান থেকে শেখার অনেক কিছু আছে।
তিনি ছিলেন সমাজে বিবাদ নিরসন করার অনন্য দৃষ্টান্ত। তার আদর্শ সম্পূর্ণ না মানলেও কিছুটা যদি মানতাম, অনুসরণ করতাম তাহলে সমাজে এত হানাহানি ও অন্যায় থাকতো না। শুধু আলেমরা নন, যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে তাদের উচিৎ এসব অনুসরণ করা।
জর্জ বার্নার্ড শ বলেছিলেন, ‘আজকে এই মুহূর্তে যদি মহানবীর আবির্ভাব হতো তাহলে সমাজে হানাহানি বিভেদ থাকতো না’। আবার এমএন রায় লিখেছেন, ‘গোত্র বিভক্ত আরব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আরব জাতীয়তাবাদকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিয়েছেন’। কারণ ইসলামের মর্মবাণী বিশেষ কোনো জাতির জন্য নয়। এটি বিশ্বাস সবার জন্য। বিদায় হজে মহানবীর ভাষণ মানবতার জন্য মহান বাণী। তিনি প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহর বাণী প্রচারে ছিলেন নিরলস। সেই বাণী এবং রসূলের হাদিস আমাদের অনুসরণ করা উচিৎ।
রিজভী বলেন, তিনি ইসলামের রাজ কায়েমের পর সবাই নিরাপদে ছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তারা যেমন নিরাপদে ছিলেন তেমনই অমুসলিমরাও ছিলেন নিরাপদ। সবাই মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতেন। আমরা তেমনই জনকল্যাণকর রাষ্ট্র চাই। যেখানে জনগণ তাদের মতপ্রকাশ করতে পারবে। ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।
দোয়া ও মিলাদে অংশ নেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন ভুইয়া শিশির, আমিনুল ইসলাম, একরামুল হক বিপ্লব, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো: আবদুর রহিম, ওলামা দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, হাফেজ মাসুম বিল্লাহসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।