সাত থেকে আট বছর বয়স থেকে চুরি বিদ্যায় হাতেখড়ি তাদের। এখন সবাই ষাটোর্ধ্ব। এখনও অবলীলায় চালিয়ে যাচ্ছেন চুরি। অর্ধশতাব্দী ধরে চুরি করা এই চক্রটির মূল টার্গেট স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা।
চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, দারোয়ান এবং সিসি ক্যামেরা নেই এমন বাসা বেছে নেয় তারা।
বয়স পেরিয়েছে ষাটের ঘর। পরনে লুঙ্গি-পাঞ্জাবি, দেখে মনে হবে পুরোদুস্তুর ভদ্রলোক। কিন্তু তারাই ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জায়গাতে চুরি করে আসছেন বলে দাবি পুলিশের।
গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এর ১৫ নম্বর সড়কে এক ডাক্তার দম্পতির বাসায় প্রবেশ করতে দেখা যায় দুজনকে। বাসায় ঢোকার আগে আরও দুজনকে অনেকটা সময় ধরে সড়কটিতে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। বাসাটির তৃতীয় তলার দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে আলমারি তালা ভেঙে ৪২ ভরি সোনা ও ৪০০০ মার্কিন ডলার চুরি করে নিয়ে যায় তারা।
ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চোর চক্রটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় গোয়েন্দা পুলিশ। এ একই চক্রের চার সদস্যকে পল্লবীর একটি বাসা থেকে চুরির সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে গ্রেফতার করা হয় আরও দুজনকে।
পুলিশ বলছে, এক সময় এরা ছিলেন সিঁধেল চোর। সময়ের পরিক্রমায় চুরিবিদ্যায় দক্ষ হয়েছেন দিনে দিনে। বয়স আর বেশভূষার ফায়দা নিয়ে বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছিলেন চুরি।
রোববার (০৯ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, কিশোর বেলায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিঁচকে চুরি দিয়ে তাদের হাতেখড়ি। এরপর অর্ধশতাব্দী বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন এই কাজ। তাঁতীবাজার এবং টঙ্গীর দুটি সোনার দোকানে প্রায় ১ হাজার ভরি চুরি করা সোনা বিক্রির কথা স্বীকার করেছে তারা। চক্রের প্রধান জব্বার মোল্লা এর আগে কখনোই গ্রেফতার হয়নি।
মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে চুরি করতে সক্ষম তারা। চুরি শেষে মালামাল ভাগ করে যে যার এলাকায় চলে যায়। পরদিন আবার অন্য কোথাও চুরির পরিকল্পনা করে তারা জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।