মাগুরা, যশোর ও বাগেরহাটে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে এখন চলছে ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য ও দুঃশাসন। আওয়ামী সরকার কর্তৃক দেশে শুরু হয়েছে রাজনীতির নামে অপরাজনীতি, প্রতিহিংসা চরিতার্থের রাজনীতি। মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে এবং জনগণের ভোটাধিকারকে পদদলিত করে দেশে একচ্ছত্র ও এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার কর্তৃত্ববাদী শাসন বলবৎ রাখা হয়েছে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতনের খড়গ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।’
দেশের বিরোধী দলগুলোকে ধ্বংস করার সুপরিকল্পিত অংশ হিসেবেই বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের এই ধারাবাহিক নিপীড়ন-নির্যাতন-উৎপীড়ন চলে আসছে।
তিনি বলেন, ‘আজকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন মাগুরার বিএনপি নেতা পিকুল খান, কিজিল খাঁন, কাজী উৎপল, আবুল বাশার, যুবদল নেতা কাজী তন্ময়, শান্তি খান, রনি বিশ্বাস, শান্ত, রাসেল, কাজী পাভেল, আরিফুজ্জামান, কামরুজ্জামান, জনি, স্বপন, ছোট জনি, পিয়াল, রাজন, ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহিম, মিলন, তরুন জোয়াদ্দার, আলী, সজল খান, আবু তাহের সবুজ, মেহেদী খাঁন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা অপু শেখ, কৃষকদল নেতা রায়হান, যশোরে বিএনপি নেতা গোলাম রেজা দুলু, আব্দুস সালাম, হাফিজুর রহমান, বুলবুল আহমেদসহ ৫ জন নেতাকর্মী, বাগেরহাটে বিএনপি নেতা এমরান হোসেন, আব্দুল মান্নান হাওলাদার, মৎস্যজীবী দল নেতা মোস্তফা শেখ প্রমূখ। তাদের সকলের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এটি আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়ঙ্কর নমুনা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আদালতকে দিয়ে মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন পাওয়ার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে সরকার। আমরা এখন আওয়ামী ঠগীদের মুল্লুকে বাস করছি। কিন্তু এসব অপকর্ম করে বর্তমান সরকার পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের যে স্বপ্ন দেখছে সেই স্বপ্নসাধ জনগণের সম্মিলিত শক্তিতে অচিরেই ধুলোয় মিশিয়ে যাবে।’
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, মাগুরায় এক ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৪ নেতা-কর্মীকে বৃহস্পতিবার দুপুরে কারাগারে পাঠিয়েছেন মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ। উচ্চ আদালতের জামিন শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠান।
গত আগস্টে মাগুরায় বিএনপির সমাবেশ চলার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাটি করেন মাগুরার আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা।