চলমান আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে মামলার কৌশল নিতে পারে সরকার এমন আশঙ্কা করে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলটির আইনজীবী ও নেতারা বলছেন, এবার মামলা করে লাভ হবে না।
আর আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তাদের কৌশল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। বিএনপি অতীতের মতো এবারও জ্বালাও-পোড়াও করলে রাজনৈতিক মাশুল দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরে এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন ঘিরে দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা এখনো বিচারাধীন। দলটির হিসাবে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখের বেশি পুরনো মামলা ঝুলছে।
চলমান আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় নতুন করে আবার মামলা হচ্ছে। ২২ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত হওয়া মামলায় আসামির সংখ্যা ৩০ হাজার বলে দাবি বিএনপির। ফলে নতুন-পুরনো মামলায় গ্রেফতার আতঙ্ক বাড়ছে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। নেতারা বলছেন, চলমান আন্দোলন বন্ধ করতে মামলাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করলেও এবার লাভ হবে না।
বিএনপি আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাদের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে এখন মামলা-মোকাদ্দমার মাধ্যমে বিএনপি নেতাকর্মীদের স্তিমিত করার অপচেষ্টা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা-মোকাদ্দমাকে এখন আর ভয় পায় না। এখন তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আন্দোলন করছেন। এই আন্দোলন মামলা মোকাদ্দমার ভয় দেখিয়ে আর দমন করা যাবে না।
বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় জনগণের ওপর ভরসা রাখছে আওয়ামী লীগ। নেতারা বলছেন, এটিই তাদের একমাত্র কৌশল। অতীতের মতো জ্বালাও-পোড়াও করলে রাজনৈতিকভাবে মাশুল দিতে হবে বিএনপিকেই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, কৌশল একটাই জনগণের জানমাল রক্ষার্থে, জীবন রক্ষার জন্য, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের সঙ্গেই থাকবেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ২০১২ সালের পর থেকে সরকার পতনের জন্য বহু আন্দোলন করেছে তারা। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, পেট্রোল দিয়ে গাড়ি পুড়িয়েছে, ট্রেন-বাসে আগুন দিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩৫০ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। দুই হাজারের বেশি মানুষেকে আহত করেছে। এসব কারণে তারা রাজনীতি থেকে অনেক দূর চলে গিয়েছিল। আগামীতেও তারা যদি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে ভবিষ্যতেও তাদের তার মাশুল দিতে হবে।
আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।