জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় জামাই-শ্বশুর পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পুলিশসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার কীর্তিনাশা নদীর তীর ও ভাষা-সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর ওপর এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শর্টগানের ৪০টি ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন বলে জানা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোক্তারের চর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা শেখ। তার ছেলে পৌরসভা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ শেখ। বাদশা শেখের জামাতা মামুন মোস্তফা নড়িয়া কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ইউনুছ শেখ ও মামুন মোস্তফা সদ্য সমাপ্ত জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করেন। দুজনই নির্বাচনে পরাজিত হন। নির্বাচন নিয়ে বাদশা শেখের ছেলে ইউনুছ ও জামাতা মামুন মোস্তফার মধ্যে বিরোধ চলছিল। তার জের ধরে বুধবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষে দুই পক্ষ প্রায় শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে নড়িয়া থানার উপপরিদর্শক ফরহাদ হোসেন ও কনস্টেবল জুয়েল আহত হন। এ ছাড়া উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ শর্টগানের ৪০টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নড়িয়া কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মোস্তফা বলেন, বাদশা শেখের লোকজন আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। আমার কর্মীরা তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মোক্তারেরচর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা শেখ বাদশা শেখ বলেন, আমার চাচাতো ভাই কাদির শেখের ছেলে মিলন শেখকে মারধর করা হয়েছে। এর জের ধরে কিছু লোক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের সময় আমি ও আমার ছেলে ইউনুছ মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলাম।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে বাদশা শেখের ছেলে ইউনুছ ও জামাতা মামুন মোস্তফার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তার জের ধরে দুই পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০টি ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এখনও কোন মামলা হয়নি।