রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক দশকের মুখোমুখি। বৃহস্পতিবার এক দীর্ঘ বক্তৃতায়, তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে ন্যায্যতা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।
পুতিন বলেন, ‘এই পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক ইস্যু তুলে ব্ল্যাকমেইল করছে এবং এভাবে তারা রাশিয়ার মিত্রদের মস্কোবিমুখ করতে চাইছে।’
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, ন্যাটো সামরিক জোট রাশিয়ার করা একটি অসমর্থিত দাবির নিন্দা করেছে। রাশিয়া দাবি করেছিল যে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে “ডার্টি বোমা” ব্যবহার করতে পারে – ডার্টি বোমা মূলত সাধারণ বিস্ফোরকের সঙ্গে তেজস্ক্রিয় উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা একটি বোমা।
ন্যাটো সদস্যরা ‘এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান’ করেছে বলে জানান জোটটির মহাসচিব ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন ‘উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে রাশিয়ার এই বিষয়টিকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করা মোটেও উচিত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মস্কোতে পুতিনের ভাষণের আগের দিন, তিনি নিয়মিত পারমাণবিক অনুশীলন তদারকি করেছেন যাতে শত্রুপক্ষের পারমাণবিক হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত থাকা যায়। আমরা রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে সরাসরি কিছুই বলিনি। আমরা শুধুমাত্র পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের নানা ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আগস্টে একটি প্রচারণা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে লিজ ট্রাস বলেছিলেন যে তিনি পারমাণবিক হামলার বোতাম টিপতে প্রস্তুত থাকবেন যদি পরিস্থিতি তাকে এটি করতে বাধ্য করে।’
পুতিন বলেন, তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের মিত্ররা এই বক্তব্যের কোনো আপত্তি করেনি! তিনি নিজেই বারবার সতর্ক করেছেন যে রাশিয়া নিজেদের রক্ষা করার জন্য ‘সব ধরণের উপায়’ ব্যবহার করবে- তার এই বক্তব্যকে স্পষ্টভাবে পারমাণবিক হুমকি হিসাবে দেখা হয়েছে।
পুতিন তার বক্তব্যে পশ্চিমের উপর পুনরায় ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, ‘এই পশ্চিমারা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বতন্ত্রতাকে অস্বীকার করার বিপজ্জনক, রক্তাক্ত এবং নোংরা খেলায় মেতেছে। বিশ্বব্যাপী পশ্চিমের “অবিভক্ত আধিপত্য” এখন শেষ হয়ে আসছে বলে তিনি জোর দেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ইতিহাসের প্রান্তে আছি। সামনে সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক, অপ্রত্যাশিত এবং একই সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দশক অপেক্ষা করছে।’
পশ্চিমারা আর দায়িত্বে থাকতে পারছে না – তবে এর জন্য তারা “মরিয়া” হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন যে “আমাদের চোখের সামনে একটি ভবিষ্যৎ বিশ্ব-ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে”, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা রাশিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।