গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক
এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি সমাবেশ করে রাজনৈতিক মাঠ গরম করেছে বিএনপি। এবার দলটির মোকাবিলায় মাঠে নামবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকলে দুই দল তাদের কর্মসূচি পালন করবে। সহিংসতায় জড়ালো সমুচিত জবাব দিয়ে বিএনপিকে মাঠ ছাড়া করার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত অর্ধডজন নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নামবেন। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাসনামল এবং ২০১৩-১৪ সালের আন্দোলনের নেতিবাচক চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরবেন।
বৈঠকে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) গণতান্ত্রিক আন্দোলন করুক, এতে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করলে ছাড় নেই।
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় ভোটকক্ষে সিসিটিভি বসানো নিয়ে ইসিতে দলীয় মতামত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়া ২৪ ডিসেম্বরের আগেই আওয়ামী লীগের সব শাখা এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছেন দলের প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি সব পর্যায়ের দলীয় কমিটিতে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল এই সময়ের কর্মীদের মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
এসময় দেশের সব জেলা সফর ও জেলা নেতাদের গণভবনে ডাকার বিষয়েও আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে মনোনয়নে ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা প্রাধান্য পাবে বলেও জানান।
বৈঠকে আগামী নির্বাচন উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ, পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন নেতারা। এসময় ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তারা।
দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিকেল সাড়ে ৪টায় কার্যনির্বাহী সংসদের ওই সভা শুরু হয়। শেষ হয় রাত ১০টার পর। শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্য এবং শোক প্রস্তাব পাঠের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, আনোয়ার হোসেন, মেরিনা জামান কবিতা ও সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাখাওয়াত হোসেন সফিক তাদের বিভাগীয় সাংগঠনিক রিপোর্ট তুলে ধরেন।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ২২তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ২৪ ডিসেম্বর করার। ওই সম্মেলন বাস্তবায়ন করতে অভ্যর্থনা, গঠনতন্ত্র সংশোধন, প্রচার এবং স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন উপ-কমিটি করা হয়েছে। এরমধ্যে অভ্যর্থনা উপ-কমিটিতে শেখ ফজুলল করিম সেলিম, গঠনতন্ত্র উপ-কমিটিতে ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রচার উপ-কমিটিতে সপু ও গোলাপসহ বিভিন্নজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরো কমিটির খসড়া দলীয় সভাপতির কাছে গুছিয়ে উপস্থাপন করে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হবে।
গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে গুরুত্ব
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে গুরুত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীর দায়িত্ব হবে দলের উন্নয়ন প্রচার করা। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সেগুলো বেশি করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে অনেক মিথ্যাচার চলছে। এই মিথ্যাচারের জবাব দিতে হবে। জনগণকে সত্যটা জানাতে হবে।