ছবি: সংগৃহীত
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হট ফেবারিট দলের তালিকায় ছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু পরের ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও তৃতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সেমির দৌড়ে বড় ধরনের নড়বড়ে অবস্থায় আছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তার মাঝে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা।
কোভিড আর অস্ট্রেলিয়া যেন হরিহর আত্মা। এই ব্যধিকে কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারছেন না তারা। তাই তো, বিশ্বকাপের আগেই প্রশাসনিক ঘোষণা আসে, করোনা আক্রান্ত হলেও ম্যাচ খেলতে বাধা নেই কোনো ক্রিকেটারের। অনেকেই ভেবেছিল, হয়তো সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হতে যাচ্ছে এটাই।
কিন্তু বিধি বাম, হলো না সেটা। উল্টো করোনার আক্রমণ হলো অজি শিবিরেই। প্রথমে অ্যাডাম জাম্পা আক্রান্ত হলেও তাকে নিয়ে খুব একটা চিন্তিত ছিল না ম্যানেজমেন্ট। ম্যাচ না খেলালেও কোনো আইসোলেশনে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি এ লেগির।
তবে ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে আবারও করোনার থাবায় বিপাকে পরে অস্ট্রেলিয়া। এবার পজেটিভ আসেন ম্যাথু ওয়েড। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, তার কোনো লক্ষণ না থাকায় ম্যাচ খেলতে ছিল না কোনো বাধা। তবে জাম্পার পর ওয়েডের আক্রান্ত হওয়াটা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি অজিরা। তাই তো, সমস্যা না থাকলেও দল থেকে আলাদা করা হয় তাকে।
কিন্তু এতেও সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করেন না অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। বিশ্বকাপের বাকি অংশে অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে মনে করছেন তিনি। তার মতে, ভাইরাসটা ছড়িয়ে গেছে অনেকের মাঝেই। এখন মাঝে মাঝেই হয়তো মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে এটা। এমনকি গোটা দলটাই হাসপাতালে পরিণত হতে পারে!
ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা সবাই এক সঙ্গেই রয়েছি। দলের প্রত্যেকেই ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে। ইতিবাচক দিক হলো, ওয়েডের কোভিড হলেও খেলার মতো পরিস্থিতিতে রয়েছে। তার তেমন কোনো উপসর্গ নেই। কিন্তু জাম্পার শারীরিক পরিস্থিতি একটু খারাপ। সে খেলার মতো অবস্থায় নেই।’
অজি কোচ বলেন, ‘ওই দুইজনের পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত সবাই একসঙ্গে ছিলাম। কারও সংক্রমণ হওয়ার হলে হয়ে গেছে। তার থেকে বাকিদেরও হতে পারে। তেমন হলে আমাদের দলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। জাম্পার কিছু উপসর্গ রয়েছে। তাই তাকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সতর্ক থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই বিষয়টা আমাদের হাতে নেই।’
সংক্রমণ বেড়ে গেলে মাঠে দল নামানো কঠিন হতে পারে বলে জানান ম্যাকডোনাল্ড। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় চাপে থাকা অস্ট্রেলিয়া আরও বিপাকে পড়বে। ম্যাকডোনাল্ডের প্রতিটি মুহূর্ত তাই কাটছে আশঙ্কার মধ্যে। এই বুঝি আবার কারও কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ হলো। কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে অ্যারন ফিঞ্চদের কোচের।
তবে সতর্কতা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলের সবারই করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। যারা ওয়েড এবং জাম্পার সঙ্গে বেশি সময় কাটিয়েছেন, তাদের ওপর বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। আগামী সোমবার (৩১ অক্টোবর) আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অজি শিবিরে করোনা কী করতে পারে, এখন সেটাই দেখার।