জেলা মোটর মালিক সমিতির ডাকা টানা ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শেষে রংপুরের সঙ্গে বিভাগের বিভিন্ন জেলার বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এতে যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকেই রংপুরের কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, মডার্নমোড়, সাতমাথা থেকে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে বাস ছেড়ে গেছে।
সরেজমিনে নগরীর কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দূরপাল্লার বিভিন্ন বাস যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে জেলা মোটর মালিক সমিতির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়। কারণ হিসেবে, হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম রুটে প্রশাসনিক হয়রানির কথা উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, ধর্মঘটের কারণে রংপুর জেলার সঙ্গে অন্যান্য জেলার সব পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের বাস, ট্রাক, পিকআপ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বিকল্প উপায়ে রিকশা-ভ্যানে, কেউ কেউ আবার পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর বাস চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হয়েছে। এতে খুশি সাধারণ যাত্রীরা।
চট্টগ্রামগামী একটি বাসের যাত্রী মিহির বলেন, ‘দুইদিন বাস চলাচল না করায় নিজ কর্মস্থলে যেতে পারছিলাম না। আগামীকাল (রোববার) অফিস আছে এজন্য ধর্মঘট প্রত্যাহারের পরপরই রওনা দিলাম।’
নাজনীন নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকার একটি হাসপাতালে আমার আত্মীয় অসুস্থ, তাকে দেখতে যেতে পারছিলাম না ধর্মঘটের কারণে। এখন ধর্মঘট শেষ হওয়ায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি।’
খাগড়াছড়িগামী শান্তি পরিবহনের ড্রাইভার নাহিদ তালুকদার বলেন, ‘দুদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় গাড়ি চালাতে পারিনি। ফলে কোনো বেতনও পাইনি। যেহেতু ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে তাই আবারও জীবিকার জন্য বের হলাম। পরিবহন ধর্মঘট হলে চালক, সুপারভাইজার, হেলপারসহ পরিবহন শ্রমিকদের খুব সমস্যা হয়।’
হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার ম্যানেজার রাসেল মিয়া জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর থেকেই যাত্রীরা কাউন্টারে ভিড় করছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বাসগুলোও চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।