ছবি: মো. সারোয়ার সালাম
সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগে ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড পেয়েছেন নরসিংদী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সারোয়ার সালাম। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী, এটি অসদাচারণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি।
তাকে এ লঘুদণ্ড দিয়ে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি), বর্তমানে নরসিংদী পৌরসভার সিইও সারোয়ার সালাম বাঞ্ছারামপুরে কর্মরত অবস্থায় এক সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। এ ছাড়া স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন, পুনরায় বিয়ে করার অনুমতি চেয়ে তার ওপর চাপ দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া যায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মতামতসহ মাঠ প্রশাসন-১ শাখার ইউও নোটের পরিপ্রেক্ষিতে সালামের নামে বিভাগীয় মামলার পর তার কৈফিয়ত তলব এবং তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা তার লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ২০২০ সালের ৬ আগস্ট ওই শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানিতে প্রাসঙ্গিক সব বিষয় বিবেচনায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ডের আশঙ্কা প্রতীয়মান হয়। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বেগম সেলিনা খানমকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগগুলোর মধ্যে উভয়পক্ষের সাক্ষ্য, জবানবন্দি, জেরা ও দাখিল করা প্রমাণগুলো বিস্তারিত ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনায় স্পষ্ট যে, অভিযুক্ত কর্মকর্তা বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অপর একজন চাকরিজীবী নারীর সঙ্গে পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী, তদন্ত প্রতিবেদন, দাখিল করা কাগজপত্র, তথ্য-প্রমাণ এবং প্রাসঙ্গিক সব বিষয় পর্যালোচনায় মো. সারোয়ার সালামের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিনি দণ্ড পাওয়ার যোগ্য। অভিযোগের মাত্রা ও প্রাসঙ্গিক সব বিষয় বিবেচনায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে একই বিধিমালার ৪(২) (ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’সূচক লঘুদণ্ড দেয়া হলো।