অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শেখ শাহীন।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি শেখ শাহীনের বিরুদ্ধে প্রাইভেটকার চালকের স্ত্রীকে ফুসলিয়ে ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় রোববার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে শেখ শাহীন ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী প্রাইভেটকার চালক।
অভিযুক্ত শহীন দৌলতদিয়া ফেলু মোল্লা পাড়ার মৃত আক্কাছ শেখের ছেলে। এর আগে তার একাধিক বিয়ে ও তালাকের ঘটনা রয়েছে। এ ঘটনায় একই গ্রামের আকবর সরদারের ছেলে হারেজ সরদার ও জনৈক জিয়া শাহীনের সহযোগী ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ওই প্রাইভেটকার চালক বলেন, শেখ শাহীন তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাবসহ কুপ্রস্তাব দিতেন। বিষয়টি তার স্ত্রী তাকে জানানোর পর তিনি শাহীনকে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহীন তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। দলের পদ-পদবি থাকায় শাহীন এলাকায় প্রচণ্ড দাপট দেখিয়ে চলেন। মাদক ব্যবসা করা, নিজে মাদকসেবন ও অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শাহীন দলের পরিচয়ে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করেন।
তিনি বলেন, শনিবার (০৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে আমার স্ত্রী বাড়ির সামনে ফুচকা খেতে গেলে শাহীন ও তার দুই সহযোগী তাকে ফুসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। শাহীন আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা, স্বর্ণের দুল, চেইন ও চুড়ি নিয়ে গেছে। আমি যোগাযোগ করলে ওইদিন রাত ৯টার দিকে শাহীন তার মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং আমাকে খুনের হুমকি দেয়। পরে শাহীন আমাকে এবং আমার তিন মেয়েকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে কাবিননামায় জোরপূর্বক আমার স্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়েছে বলে শুনেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনোরকম তালাক হয়নি। আমার মেয়েরা অনেক ছোট। তারা তাদের মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে। আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই।
ওই গৃহবধূর মা বলেন, শাহীন অনেক খারাপ ছেলে। সে একসময় দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর মধ্যে পড়ে থাকত। সেখানকার মেয়েদের সঙ্গে তার উঠবস ছিল। এখন সে দলের পদ পেয়ে যা ইচ্ছা তাই করছে। ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। আমি মা হিসেবে আমার মেয়েকে ফেরত চাই। তা না হলে শাহীন আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলবে। মেয়ের তিনটি অবুঝ শিশুসন্তানকে নিয়ে আমরা চরম বিপাকে রয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শেখ শাহীনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রাইভেটকার চালকের সঙ্গে ৪ থেকে ৫ মাস আগে এই নারীর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমি তাকে ভালোবেসে নিয়ে এসে বিয়ে করেছি। কোনো অন্যায়-অপরাধ করিনি। এখন নতুন স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় আছি। শিগগিরই এলাকায় ফিরব। আমার বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি ও মাদকসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সঠিক নয়।
ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ভুক্তভোগী স্বামীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শাহীনের বিরুদ্ধে অধিকতর খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তার সম্পর্কে নানান কথা শোনা যাচ্ছে।