জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে মিশরে জড়ো হয়েছেন বিশ্বনেতারা। গত বছরও কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়। ধনী দেশগুলো সেগুলো কতটুকু পূরণ করতে পেরেছে, তার একটি চিত্র তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এতে দেখা যায়, অল্প কিছু লক্ষ্য বাস্তবায়ন ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি দেশগুলো।
গেল কয়েক বছর বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। এর বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে প্রতি বছরই আয়োজন করা হয় জলবায়ু সম্মেলনের। গত বছর কপ-২৬ সম্মেলনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা, কার্বন নিঃসরণ কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সেসব উদ্যোগের বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি।
চলতি বছর মূল্যস্ফীতি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও করপোরেট কর বাড়ানোর বিষয়ে বিল পাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এসব খাতে বরাদ্দে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দেয়া হয়। এটাকে বাইডেন প্রশাসনের বড় অর্জন বলে মনে করা হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অর্থ সহায়তার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি ওয়াশিংটনকে।
কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ু ইস্যুতে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ব্রিটেন আশানুরূপ কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেশ গতিশীল। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়ায়, অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় বিবিসি। কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় কার্বন নিঃসরণ চলতি বছর দুই শতাংশ বেড়েছে।
২০৩০ সাল নাগাদ ৪৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের প্রতিশ্রুতি ছিল ভারতের। কিন্তু দেশটির শতাধিক কয়লা খনি পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে জানান জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।
পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত আমাজনের ৬০ শতাংশই ব্রাজিলে। বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালেই বন উজাড় ৪৮ শতাংশ বেড়ে যায়। এ বছর দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন লুলা দা সিলভা। নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় দেশটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদী অনেকে।
এদিকে জলবায়ু পরির্বতনের বিরূপ প্রভাবে বিশ্ব নরকের দিকে ধাবিত হচ্ছে উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মিশরে চলা কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেন তিনি।