মৌলভীবাজারে একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেফাকুল ইসলাম। তবে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে তার পরিবর্তে বুলবুল আহমদ সেই সাজা ভোগ করেন।
অবশেষে সোমবার (০৭ অক্টোবর) বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালতে বিষয়টি বুলবুল আহমদ নিজেই স্বীকার করেন। এতেই মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় মৌলভীবাজারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত সেফাকুল ইসলাম মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাড়ন্তি গ্রামের বাসিন্দা। বুলবুল আহমদ সদর উপজেলার আথানগীড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সেফাকুল ইসলাম মৌলভীবাজার এক্সিম ব্যাংক শাখা থেকে ৬৪ লাখ টাকার ঋণ নেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের টাকা পরিশোধের জন্য বারবার নোটিশ দেন। তারপরও সেফাকুল ইসলাম ব্যাংকঋণের টাকা পরিশোধ করেননি। একপর্যায়ে এসে তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ৬৪ লাখ টাকার একটি চেক দেন। তবে এ চেকের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা না থাকায় সেটি ডিজঅনার হয় এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় সেফাকুল ইসলামকে পুলিশ আটক করে। এতে তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্ত হওয়ার পরে এ মামলাটি মৌলভীবাজার দায়রা জজ আদালতে বদলি হয়। এ আদালতের বিচারে আসামি সেফাকুল ইসলামকে ৬৪ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সেফাকুল ইসলাম এ তিন মাসের কারাদণ্ড থেকে মুক্তি পেতে সদর উপজেলার আথানগীড়ি গ্রামের বুলবুল আহমদ নামে এ ব্যক্তি দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে কারাদণ্ড ভোগ করেন। শেষ পর্যায়ে এসে বুলবুল আহমদ এ বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানান।
মৌলভীবাজার কারাগারের প্রধান আবদুল কুদ্দুস বলেন, তারা বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা দায়রা জজকে অবহিত করেন। এতে দায়রা জজ আদালত উভয়কে নোটিশ করে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন। সোমবার উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে আদালতে প্রমাণিত হয় কারাদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তি মূল আসামি সেফাকুল ইসলাম নন। তিনি মূলত বুলবুল আহমেদ। দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে তিনি কারাদণ্ড ভোগ করেছেন।
সেফাকুল ইসলামের প্রথম দিকের আইনজীবী আবদুল মতিন বলেন, এ মামলায় সেফাকুল ইসলামের সাজা হলে তিনি জামিনে মুক্ত হন। এরপর তাকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল বলেন, সেফাকুল ইসলামের নামে দেড় লাখ টাকা চুক্তির বিনিময়ে বুলবুল আহমেদ এ সাজা ভোগ করেছেন, যা রীতিমতো অন্যায়।
আর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান এটিকে বিস্ময়কর প্রতারণা, এর বিচার হওয়া উচিত মনে করেন।
২০১৫ সালে মৌলভীবাজার এক্সিম ব্যাংক সাফাকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে।