নাটোর জেলার ২টি চিনিকল থেকে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিলেও আখের দাম বৃদ্ধিতে এবার চিনিকলগুলোতে আখ সরবরাহের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে টানা ৫ বছর লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হওয়া ২টি চিনিকল এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা করছে।

চলতি বছর ২টি চিনিকল ২০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। পাশাপাশি ২টি চিনিকলের যন্ত্রাংশ মেরামতের জন্য কর্মব্যস্ত দিন পার করছেন কর্মীরা।

দুটি চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারীরা জানান, আগামী ২৫ নভেম্বর নাটোরের লালপুরের নর্থ বেঙ্গল চিনিকল ও ২ ডিসেম্বর সদর উপজেলার নাটোর চিনিকল আখ মাড়াই শুরু করবে। আখ মড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে ২টি চিনিকলের যন্ত্রাংশ মেরামত চলছে। চিনিকলগুলোর ৩৬ বছরের এই পুরনো যন্ত্রাংশ মাড়াই চলাকালে কোনো ধরনের ত্রুটি দেখা না দেয় সেই বিষয়টা মাথায় রেখে যন্ত্রাংশ সারানোর কাজ করছেন তারা।

আর আখ চাষিরা জানান, এক সময় চিনিকল দুটিতে টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার পাশাপাশি আখের ন্যায্যমূল্য পেতেন না। গুড় উৎপাদনকারীদের কাছে নগদ টাকা পাওয়ায় চিনিকলে আখ সরবরাহ করতে কৃষকদের অনীহা ছিল। তবে চলতি বছরের জুন মাসে প্রতি মণ আখের দাম ৪০ টাকা বৃদ্ধি করে ১৮০ টাকা করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। এ ছাড়া গত মৌসুম থেকে চিনিকলগুলো কৃষকদের দ্রুত টাকা প্রদান করায় এবার চিনিকলে আখ সরবরাহ করবেন এ অঞ্চলের আখ চাষিরা।

নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া ও নর্থবেঙ্গল চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিছুর রহমান জানান, কৃষকরা ঠিকমতো আখ সরবরাহ না করায় টানা ৫ বছর তারা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। গত মৌসুমে ২টি চিনিকল ৮ হাজার ৬০৪ মেট্রিক চিনি উৎপাদন করলেও চলতি মৌসুমে ২টি চিনিকল ২০ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এবার কৃষকদের আখ সরবরাহের আগ্রহ থাকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা করেছন তারা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি আখ মাড়াই মৌসুমে জেলায় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হবে। আর এর মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২টি চিনিকল।