রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের নরসিংহ গ্রামে ১৬ বছর বয়সী কিশোরীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যার অভিযোগে ৫ আসামিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় ৪ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। রায়ের পর তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। আলমগীর নামে মামলার অপর আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ গ্রামের আইয়ুব আলীর কিশোরী কন্যার সাথে একই গ্রামের সামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের এক পর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে আবুজারকে বিষয়টি জানায়।
২০১৫ সালের ১৪ মে তারিখে নিহত কিশোরীর বাবা মা এক আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। বাসায় কিশোরী মেয়ে ও সান্তনা নামে তার এক ভাগ্নি ছিল। এ সুযোগে আসামি আবুজার তাদের বাসায় এসে নিহত কিশোরীকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আবুজার ও তার অপর ৪ বন্ধু আলমগীর, নাজির হোসেন, করিম বাদশা ও আমিনুর পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৫ আসামি মিলে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে কিশোরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সব ঘটনা তার বাবামাকে জানাবে বলে প্রকাশ করলে আসামিরা তাকে হাচুয়া দিয়ে জবাই করে লাশ বাড়ির অদূরে একটি ক্ষেতে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা দায়ের করে। এলাকাবাসী আসামি আবুজারকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
পরে পুলিশ তার দেয়া জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে অপর ৩ আসামি নাজির হোসেন , করিম বাদশা ও আমিনুরকে গ্রেপ্তার করে। আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে গনধর্ষণ ও জবাই করে হত্যার কথা স্বীকার করে। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ৫ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। পলাতক আসামি আলমগীর গ্রেপ্তার হবার পর সাজা কার্যকর করা হবে বলেও বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান এ রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করছেন।সেই সাথে উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।