নানা নাটকীয়তা শেষে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বিরোধী জোট পাকাতান হারাপানের নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম। জাতীয় নির্বাচনের পাঁচদিন পর বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় ইস্তানা নেগারা রাজপ্রাসাদে রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন এবং একই সঙ্গে শপথ পাঠ করান।
মালয়েশিয়ায় গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। এই অস্থিতিশীলতা নিরসনের চেষ্টা হিসেবে গত শনিবার (১৯ নভেম্বর) দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো দল বা জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারবিরোধী জোট পাকাতান হারাপান (পিএইচ) ৮২টি আসন নিয়ে প্রথম হয়। এরপর ৭৩টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের জোট পেরিকাতান ন্যাশনাল (পিএন)। আর ৩০টি আসন নিয়ে তৃতীয় হয় ক্ষমতাসীন জোট বারিসান ন্যাশনাল (বিএন)।
নির্বাচনের পর আনোয়ার ইব্রাহিম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের কেউই তা দেখাতে পারেননি। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলো সরকার গঠনে ব্যর্থ হলে রাজা হস্তক্ষেপ করেন। তবে শেষ সুযোগ হিসেবে সোমবার (২১ নভেম্বর) দেশটির রাজা নোটিশ জারি করেন।
এতে মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২টার মধ্যে দলগুলোকে ২১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১১২টি আসন নিয়ে জোট সরকার গঠনের জন্য তালিকা জমা দিতে বলা হয়। তালিকা পাওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
মঙ্গলবারের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পারেনি। অচলাবস্থা কাটাতে প্রধান দুই জোটের নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম ও মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজা। তবে দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি প্রধান এই দুই জোট। এরপর বিষয়টি রাজার এখতিয়ারে চলে যায়।
দুদিন পর বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে ইস্তানা নেগারা রাজপ্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে আনোয়ার ইব্রাহিমকে মালয়েশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়। এরমাধ্যমে আনোয়ার ইব্রাহিমের দীর্ঘ তিন দশকের প্রতীক্ষার অবসান হলো।