চীনে বিয়ে করতে গেলে ছেলে পক্ষকে গুনতে হয় বিপুল অর্থ। কারণ স্থানীয় রীতি মেনে পরিশোধ করতে হয় ‘কনের মূল্য’, বিশেষ করে দেশটির ছোট শহর ও গ্রামগুলোতে। প্রচলিত সেই রীতি মেনে বিয়ে করতে গিয়ে সম্প্রতি বিপাকে পড়েছেন এক চীনা যুবক। এরপর বিয়ের অনুষ্ঠান বাবদ খরচ হওয়া অর্থ আদায়ের জন্য বেছে নেন অভিনব পন্থা।
সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের হেনান প্রদেশের বিয়াং এলাকায় ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের (ম্যাচমেকার) মাধ্যমে পরিচয়ের পর গত জানুয়ারিতে লি নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেন ২৫ বছরের হোউ। পাঁচ লাখ ১০ হাজার ইউয়ান (৭২ হাজার মার্কিন ডলার) খরচ করে জাঁকজমকের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। এ অর্থের বেশিরভাগই পরিবার-আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করতে হয়েছিল তাকে।
কিন্তু বিয়ের মাত্র ৩৩ দিন পরই দেখা দেয় বিপত্তি। তুমুল ঝগড়া হয় লি-হোউয়ের মধ্যে। এরপর থেকেই আলাদা থাকা শুরু করেন তারা। হোউয়ের স্ত্রী লি চলে যান বাবার বাড়িতে।
এ ঘটনার পর আদালতে ডিভোর্সের আবেদনের পাশাপাশি স্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার ইউয়ান চাইছেন হোউ।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়, বিয়ে বাবদ খরচ হওয়া অর্থের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ফেরত চেয়ে প্রথমে নিজের গাড়িতে একটি ব্যানার টাঙান হোউ নামের ওই যুবক। পরে সেই গাড়ি নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে গিয়ে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে মাইকিং করে অর্থ চাওয়া শুরু করেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনা সামনে আসার পর স্থানীয় সামাজিক মাধ্যমে চীনে বিয়ের রীতি-নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। চীনের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘এমন আরও ঘটনা সামনে আসবে। হেনানে বিয়ে করতে হলে কনেপক্ষকে এক লাখ ইউয়ানের বেশি দিতে হয়। ফলে ছেলে বিয়ে দিতে গিয়ে এখন প্রায়ই মা–বাবাকে ঋণ করতে হচ্ছে।’
চীনা মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট ওয়েইবো-তে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, এ ধরনের ঘটনা আরও বেশি প্রকাশ্যে আসা উচিৎ। হেনানে ‘কনের দাম’ সাধারণত এক লাখ ইউয়ানের বেশি হয়, যা বহন করা ছেলে পক্ষের জন্য কঠিন। ফলে বিয়ের খরচ যোগাড় করতে গিয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে ধারদেনা করেন। এখন এটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।