বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, আমাকে আমার কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হয়নি। অথচ পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিটের লোকজন ঢুকছে, বের হচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। নিঃসন্দেহে তারা আরও কোনো চক্রান্ত করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অপেক্ষা করছি, সমাবেশ করার জন্য একটা সিদ্ধান্ত পাব। কিন্তু সিদ্ধান্ত পাওয়ার বদলে হঠাৎ করে মারামারি শুরু করেছে। তারা নির্দয়ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে, গোলাগুলি করেছে। নিজেরাই বোমা ফোটাচ্ছে, সাউন্ড গ্রেনেন্ড নিক্ষেপ করছে। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রত্যেক দিনের মতো অপেক্ষা করতেছিল।
তিনি আরও বলেন, দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাকে আটকে রেখে ভেতরে প্রবেশ করেছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। ভেতরে নিঃসন্দেহে কোনো চক্রান্ত করছে।
এরপরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বসে পড়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কার্যালয়ের সামনে আসেন তিনি। এ সময় ভেতরে ঢুকতে গেলেও পুলিশ ঢুকতে দেয়নি। পরে প্রায় ২০ মিনিট পর তাকে কার্যালয়ে ঢোকার অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে কার্যালয়ে প্রবেশ না করে সামনে বসে পড়েছেন তিনি।
এর আগে বিকেল তিনটার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক বন্ধ করে দলটির নেতাকর্মীরা জমায়েত হওয়ায় পুলিশ তাদের সরাতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন এই সংঘর্ষ শুরু হলো। আজ সকাল থেকেই পল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেননি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পল্টন এলাকা। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
বিএনপি চায় তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে। কিন্তু পুলিশ বলছে, রাস্তায় সমাবেশ বা কোনো জমায়েত হওয়া যাবে না। পুলিশ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। তবে বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে অনড় রয়েছে। এরপর আরামবাগের আইডিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তায় সমাবেশে জন্য বিএনপি অনুমতি চাইলে পুলিশে তাতে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইতজেমার ময়দান অথবা পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে বিএনপি চাইলে সমাবেশ করতে পারে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে পুলিশের কোনো আপত্তি নেই বলেও গতকাল (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।