বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লড়াইয়ে নেইমার-মদ্রিচ।
২০ বছর ধরে অধরা বিশ্বকাপ শিরোপার সন্ধানে থাকা ব্রাজিল টানা অষ্টমবারের মতো খেলছে কোয়ার্টার ফাইনাল। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া। এবার নিয়ে মাত্র ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলছে ১৯৯১ সালে স্বাধীন হওয়া দেশটি। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল ফেবারিট হিসেবে নামলেও ছেড়ে কথা বলবে না ক্রোয়াটরা। ব্রাজিলকে কখনোই হারাতে না পারার আক্ষেপটাও এবার দূর করতে চায় তারা।
হেক্সা মিশনে ব্রাজিলের সামনে এবার ক্রোয়েশিয়া। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুদল। বিশ্বকাপের হট ফেবারিট ব্রাজিল শেষ ষোলোর ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াকে। অন্যদিকে টুর্নামেটে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া টাইব্রেকারে হারিয়েছে আরেক এশিয়ান পরাশক্তি জাপানকে।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ঐতিহাসিকভাবেই ব্রাজিলকে রাখতে হচ্ছে ফেবারিটের জায়গায়। যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর ব্রাজিলকে কখনোই হারের স্বাদ দিতে পারেনি ক্রোয়াটরা। তবে সবশেষ চার আসরে টানা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে তিনবারই হারের স্বাদ পাওয়া ব্রাজিলের জন্য ভয়ের খবরও আছে।
হাই ভোল্টেজ ম্যাচ সামনে রেখে জেনে নেয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য–
* বিশ্বকাপের সব কটি আসরে খেলা ব্রাজিল টানা অষ্টমবারের মতো পা রেখেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। এর মধ্যে ১৯৯৪, ১৯৯৮ ও ২০০২ সালে টানা তিন ফাইনাল খেলে দুবার কাপ জেতে তারা। তবে ২০০২ সালের পর মাত্র একবারই কয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি পার হতে পেরেছে তারা। ২০১৪ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ ব্যবধানে পরাজিত হয় স্বাগতিক ব্রাজিল।
* এবার নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপে তাদের সেরা সাফল্য ২০১৮ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা। ১৯৯৮ সালে অভিষেক আসরেই সেমিফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়াটরা। ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে ফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। ১৯৯৮-২০১৮-এর মাঝে আরও তিন আসরে খেললেও প্রতিবার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে তারা।
* ২০০২ বিশ্বকাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া ব্রাজিল এরপর ২০১৪ বিশ্বকাপ বাদে কোনো আসরেই একের বেশি ম্যাচে হারের স্বাদ পায়নি। শুধু ২০১৪ সালে নিজেদের মাটিতে সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে হারার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও ৩-০ গোলে হারে।
* বিশ্বকাপে নিজেদের খেলা সবশেষ ১১ ম্যাচের ১০টিতেই অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া। একমাত্র হারটি ২০১৮ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে।
* দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই পর্ব থেকে এবার অপরাজিত থেকেই বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ব্রাজিল। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর তৃতীয় ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে হেরে গেছে তারা। শেষ ষোলোর ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে নেইমার-ভিনিসিউস-রিচার্লিসনরা।
* কাতার বিশ্বকাপে মাত্র একটি ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে জয়ের দেখা পেয়েছে ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপপর্বের তৃতীয় ম্যাচে তারা কানাডাকে ৪-১ গোলে হারায়। গ্রুপপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে মরক্কো ও বেলজিয়ামের বিপক্ষে ড্র করে তারা। শেষ ষোলোয় জাপানের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে খেলা ১-১ গোলের সমতায় শেষ হলে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জয় পায় ক্রোয়াটরা।
* ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে অপরাজিত ব্রাজিল। তিন ম্যাচেই জয়ের দেখা পাওয়া ব্রাজিল এক ম্যাচে করেছে ড্র। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ হয়েছে দুবার। দুবারই জয়ের দেখা পেয়েছে ব্রাজিল। ২০০৬ বিশ্বকাপে প্রথম দেখায় কাকার একমাত্র গোলে ক্রোয়াটদের হারায় ব্রাজিল। ২০১৪ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া। নেইমারের জোড়া গোলে ব্রাজিল ৩-১ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়াকে।