ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতাল।
ফরিদপুরে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা ও বৃদ্ধরা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুরে দিনে গরম, রাতে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হয়। এমন দ্বৈত আবহাওয়ায় ফরিদপুরে হঠাৎ করে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে।
বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সরকারী-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। ফলে হাসপাতালগুলোতে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। অনেকে সরকারি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে আসছে বেসরকারি হাসপাতালে। তবে বেসরকারি হাসপাতালেও পাওয়া যাচ্ছে না শয্যা।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর চাপে হাসপাতালের বেড খালি না থাকায় অনেকে আবার বারান্দায় চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। রোগীর স্বজনরা বলছেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
নগরকান্দা উপজেলার তালমা থেকে আসা সালমা বেগম বলেন, হঠাৎ করে ঠান্ডার কারণে আমার মেয়ের জ্বর-কাশি শুরু হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি।
রাবেয়া খাতুন নামে এক নারী বলেন, আমার বাচ্চা গত দুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। পরে গতকাল (সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর) বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে এসে বাচ্চাকে ভর্তি করানোর জন্য কোনো বেড পেলাম না। পরে বাধ্য হয়ে বারান্দায় থেকেছি।
এদিকে হঠাৎ করে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে ঠিকমতো সেবা প্রদান করে রোগীদের সুস্থ করে তুলছেন হাসপাতালের সেবিকারা।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ (জরুরি বিভাগ) ডা. পার্থ প্রতিম সিকদার বলেন, শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় অল্প সময়ে রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। আর তাই শিশুদের প্রতি অধিক যত্নশীল হতে হবে। অসুস্থ হলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত দুদিনে ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে ফরিদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে হাসপাতালরে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫০০ শিশু আর ভর্তি হয়ে ৬০ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছ।