চীন তার দেশের সব নাগরিকদের একটি সর্বজনীন পরিচয়ে নিয়ে যেতে জাতিঘত সংখ্যালঘু বিভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর আত্মীকরণ নীতি প্রয়োগের ব্যাপারে আরও কঠোর হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অক্টোবরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চবার্ষিক কংগ্রেসের পর জাতিগত সংখ্যালঘু কর্মকর্তা নিয়োগ এবং সংখ্যালঘু নীতির জন্য অভিযুক্তদের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রতীয়মান হয় যে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে জাতিগত বৈচিত্র্যতা আর অগ্রাধিকার পাচ্ছে না।
ওই কংগ্রেসে কর্মকর্তা নিয়োগে দেখা গেছে, গত ১০ বছরের মধ্য এবারই কমিউনিস্ট পার্টিতে জাতিগত সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্ব সবচেয়ে কম।
পার্টির কংগ্রেসে আরও দেখা গেছে, পার্টির শক্তিশালী ২৪ সদস্যের পলিটব্যুরোতে নতুন স্থান পাওয়া ৬৬ বছর বয়সী শাই তাইফেংকে দলের ইউনাইটেড ফ্রন্ট ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের (ইউএফডব্লিউডি) প্রধান করা হয়েছে। এই সংস্থাটি চীনের জাতিগত সংখ্যালঘু নীতিতে প্রধান ভূমিকা রাখে। আর তাইফেংকের নিয়োগ সংস্থাটিকে কয়েক দশকের মধ্যে দলীয় ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির সেন্টার অন কনটেমপোরেরি চীনের গবেষক অ্যারোন গ্ল্যাসারম্যান বলেন, শির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি জাতিগত সংখ্যালঘুদের নির্মূল এবং হানদের পুরস্কৃত করার চেষ্টা করছে না। দলটি বিভিন্ন সংখ্যালঘু ও হানদের মধ্যে পার্থক্য দূর করার চেষ্টা করছে। কমিউনিস্ট পার্টির বিশ্বাস, এটি রাজনৈতিকভাবে কার্যকর হবে এবং জাতীয় পরিচয়কে ঐক্যবদ্ধ করবে।
তিনি বলেন, এটি মূলত (জাতিগত সংখ্যালঘুদের) মান্দারিন ভাষা বলতে, সর্বজনীন চীনা জাতীয় পরিচয়কে মেনে নিতে এবং সর্বোপরি শি এবং তার শাসনকে সমর্থনে উৎসাহিত করে।
গ্ল্যাসারম্যান আরও বলেন, আগে চীনের সংখ্যালঘু নীতিগুলো সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আচার-অনুষ্ঠান, ভাষা এবং পরিচয়কে ধারণ করার জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু ‘নীতিগুলোর দ্রুত পুনঃলিখন হয়তো ওইসব লোকদের দূরে সরিয়ে দেবে যারা দীর্ঘদিন ধরে এই শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন দিয়ে আসছেন।
চীনে হান জাতি ছাড়াও ৫৫টি ভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির বসবাস। এসব জাতির মোট সদস্য সংখ্যা ১২৫ মিলিয়ন যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ। এর মধ্যে সাত মিলিয়ন আবার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য।