সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে নিজের গ্রেফতার, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) অধিকার ও হেফাজত ইস্যুতে তাসনিম খলিলদের মিথ্যা অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ। ফলে ভেস্তে গেছে বাংলাদেশকে দেয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সুবিধা বাতিলের ষড়যন্ত্র।
গত ৬ ডিসেম্বর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসে বেশ কয়েকটি বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন। আলোচনার এক পর্যায়ে বাংলাদেশকে দেয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সুবিধা বাতিল করে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সুপারিশ করেন নেত্র নিউজের সম্পাদক তাসনিম খলিল।
এ প্রস্তাবকে বিদ্বেষমূলক ও হঠকারী উল্লেখ করে তাসনিম খলিলের কাছে বৈঠকে উপস্থিত হওয়া বাংলাদেশি কূটনীতিকের প্রশ্ন ছিল, ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের সময় নির্যাতন ও সুইডেনে আশ্রয় নেয়ার সঙ্গে বর্তমান সরকারের কোনো সংযোগ না থাকার পরও কেন বার বার সরকারের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ আর প্রচারণা করা হচ্ছে?
এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তাসনিম খলিল।
এরপর ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে নিহতের সংখ্যা নিয়ে যে তথ্য দাবি করেছিল এনজিও অধিকার, তার পক্ষেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তাসনিম খলিল ও টবি ক্যাডম্যানরা।
এদিকে বার বার বিদেশি পরাশক্তিগুলোর কাছে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা যারা চালাচ্ছেন তারা আসলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জনসাধারণের কল্যাণের পথে হুমকি এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ষড়যন্ত্রকারীদের দেশদ্রোহী বলেও মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হোক, নানাভাবে শাস্তি দেয়া হোক বাংলাদেশকে, বাংলাদেশকে শাস্তি দিলে তারা যেন স্বস্তি পাবে, বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে তারা যদি এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন এর চাইতে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এটা তো দেশদ্রোহিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত বলেন, একমুখী নানাবিধ চক্রান্তের বিরুদ্ধে জনগণকে অবহিত করতে হবে, যেন তারা বিভ্রান্ত না হয়। চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং একইসঙ্গে তাদের ব্যাপারে সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হবে।
আর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো চক্রটির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, তাসনিম খলিলের একটাই উদ্দেশ্য, তিনি দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
এর আগে কোভিড সংক্রমণের সময় মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছিলেন তাসনিম খলিল। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়েও নেত্র নিউজে ধারাবাহিকভাবে বিষেদগারমূলক তথ্য প্রচার করেন তাসনিম খলিল ও যুদ্ধাপরাধীদের লবিস্ট ডেভিড বার্গম্যান।