বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের উন্মাদনা। চার বছর পর যখন ফুটবলের বিশ্ব আসর শুরু হয় তখন রেকর্ড আর পারফরম্যান্সের খাতা খুলে তর্ক জুড়ে দেয় বিপরীত দলের সমর্থনকারী পরম বন্ধুও।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টিতে গিয়ে হেক্সা মিশন অপূর্ণ থেকে গেছে নেইমারদের। তাতে সমর্থকদের হৃদয়ে হয়েছে রক্তক্ষরণ। একই রাতে সেমিফাইনালের টিকেট হাতে পায় আর্জেন্টিনা। বিষয়টা ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য ছিল কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো।
প্রিয়দলের ব্যর্থতায় অনেকে কষ্ট পেয়েছেন আবার অনেকে ক্ষোভে প্রিয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন। তাদেরই দুইজন বগুড়া সুলতানগঞ্জ পাড়ার বাসিন্দা চাচা শেখ মোস্তফা (৫৩) ও ভাতিজা বিপ্লব শেখ (৩২)।
২০০২ সালে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পঞ্চম ট্রফি জয়ের পর থেকে সেলেসাওদের সমর্থন করে আসছেন বিপ্লব। চাচা মোস্তফাও বহু আগ থেকে ব্রাজিলের ভক্ত। তবে ক্রোয়াটদের বিপক্ষে সমর্থিত দল হেরে যাওয়ায় এবার দলছুট হলেন এই চাচা-ভাতিজা।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় শহরের হাকির মোড় এলাকায় একটি নির্মাণাধীন দোকান ঘরে এলাকার ঘনিষ্ঠ আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা আর্জেন্টিনার সমর্থক হিসেবে সাদা-আকাশী জার্সি পরেন।
জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হারের পর থেকে ব্রাজিলের সমর্থকদের সেভেন আপ বলে খোঁচা দিয়ে থাকেন আর্জেন্টিনা সমর্থকরা। সে কারণে সেভেন আপ দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে ব্রাজিলের পতাকাযুক্ত শার্ট খুলে আলবিসেলেস্তাদের জার্সি পরেন বিপ্লব।
দল বদলের প্রসঙ্গে বিপ্লব বলেন, ‘২০০২ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর থেকেই আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার। এতদিন ব্রাজিলকেই সাপোর্ট করেছি। তবে আর্জেন্টিনার দলে মেসির খেলা খুব ভালো লাগে। এবার ব্রাজিলের বিদায়ের পর তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেসির আর্জেন্টিনাকে সাপোর্ট করব। এখন থেকে আমি শুধুই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।’
বিপ্লবের চাচা মোস্তফাও জানান, ‘মেসির যাদুতে মুগ্ধ হয়েই আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ওই এলাকার ব্যবসায়ী আরিফ শেখ বলেন, ‘বিপ্লব আমার দোকানে প্রতিদিন আড্ডা দেয়। সে এতদিন পর একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য তাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। তার জন্য আমরা আর্জেন্টিনার জার্সিও কিনে দিয়েছি।’
দেশের বিভিন্ন জেলায় এমন ঘটনা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তবে এই দুই নব্য আর্জেন্টিনা সমর্থক জানান, তারা কেবল আর্জেন্টিনার খেলা ভালোবেসেই দল বদল করেছেন।