প্রতিপক্ষের জন্য এক গোলকধাঁধা মরক্কোর রক্ষনভাগ
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে আফ্রিকান আরব্য রূপকথা রচনার কারিগর মরক্কো। অ্যাটলাস লায়নদের শক্তিশালি রক্ষণভাগ নিয়ে চিন্তায় ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম। সেমিতে উঠে এরইমধ্যে ইতিহাস গড়েছে মরক্কো। সে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লক্ষ্য কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের। আল বায়েতে স্টেডিয়ামে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচ।
আল বায়েতে স্বপ্ন ছোয়ার মাত্র দুই ধাপ দূরে ফ্রান্স ও মরক্কো। ১৯৭৪ সালে নতুন ট্রফির প্রবর্তনের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা জয়ের মধুর অপেক্ষা ফরাসিদের। মুদ্রার উল্টোপিঠে আফ্রিকান আরব্য রূপকথা লিখতে প্রস্তত মরক্কো। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে উঠে এরইমধ্যে ইতিহাস গড়ে ফেলেছে দ্য অ্যাটলাস লায়ন্স। তবে, সেখানেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে নারাজ ওয়ালিদ রেগরাগুয়ের তরুণ তুর্কিরা। লুসাইলের ফাইনালে চোখ তাদের।
মরুর বুকে অঘটনের বিশ্বকাপে সারপ্রাইজ প্যাকেজ, জায়ান্ট কিলারসহ নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করা হচ্ছে আশরাফ হাকিমিদের । ২৬ জনের স্কোয়াডে ১৪ জন ফুটবলারই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তবে, হৃদয় উজার করে তারা খেলছেন মরক্কোর জন্য। অতীতে ফরাসি ঔপনিবেশিক মরক্কো এবার হুঙ্কার দিয়েছে তাদের অতীতের শাসক ফ্রান্স বধের। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র, এরপর মরক্কোর দাপটে কেপেছে বেলজিয়াম, স্পেন সবশেষ শিকার পর্তুগাল।
এতগুলো কঠিন বৈতরণীর পর নিজেদের জায়ান্ট কিলার মানতে চাননা মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই। তিনি নিজেও জন্মসূত্রে ফ্রান্সের নাগরিক। ফরাসিদের ফেবারিট মানলেও মরক্কোকে ফাইনালের দাবিদার মনে করছেন কোচ। কার্ডের কারণে নেই ওয়ালিদ চেদিরা। ইনজুরিতে অনিশ্চিত নুসাইর মাজরাউই, নায়েফ ও রোমেইন সিসের খেলা। এই ম্যাচে মরক্কোর সম্ভাব্য ফরমেশন ৪-৩-৩।
মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই বলেন, ‘দেখুন আমি কোথায় জন্মগ্রহণ করেছি সেটা বড় বিষয় নয়। আমার কাছে মরক্কোই আসল। আমরা জায়ান্ট কিলার নই। এটা প্রমাণিত। সেমিফাইনালে ফ্রান্স শক্ত প্রতিপক্ষ হলেও, আমরা আত্মবিশ্বাসী।
পুরো আসরে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি গোল হজম করেছে মরক্কো। সেটিও আত্মঘাতী। তাই দ্য অ্যাটলাস লায়নদের রক্ষণভাগ নিয়ে চিন্তায় ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। তবে, এমবাপ্পে, জিরুরা যে কোন বাধার দেয়াল ভেঙ্গে জয়োৎসব করতে পারেন, সেটা ভালভাবেই জানা ফ্রান্সের কোচের। সম্ভাব্য ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে মরক্কো বধের পরিকল্পনা ফ্রান্সের। শুরুর ইনজুরি মিছিল এখন আর নেই। নির্ভার তাই ফ্রান্স।
ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশাম বলেন, ‘মরক্কোর রক্ষণভাগ সত্যিই অসাধারণ। আমরা সতর্ক হয়েই খেলতে চাই। আশা করছি রাশিয়ার পর কাতারেও ফাইনাল খেলবো’
এখন পর্যন্ত দু’দলের ১১ বারের দেখায় ৭টি জয় ফ্রান্সের। তিনটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। একবার জিতেছে মরক্কো।