বিশ্বজুড়ে রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিক কারাবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন রিপোর্টাস উইথ আউট বডার্স (রিপোর্টার্স সান ফ্রন্টিয়ার্স বা আরএসএফ)।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক বার্ষিক বিবরণীতে তারা জানায়, ২০২২ সালে এখন পর্যন্ত ৫৩৩ সাংবাদিক কারাবন্দি রয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৮৮।
তারা আরও জানিয়েছে, এদের মধ্যে চার ভাগের এক ভাগ সাংবাদিক পুরো বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছে। কারাবন্দি সাংবাদিকের মধ্যে চীনে বন্দি রয়েছেন ১১০ জন। মিয়ানমারে ৬২ জন, ইরানে ৪৭ জন, ভিয়েতনামে ৩৯ জন, বেলারুশে ৩১ জন। সংস্থাটি জানায়, ইরানের বিক্ষোভ বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের জেলেবন্দি হওয়ার রেকর্ড বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
বর্তমানে ৪৭ জন সাংবাদিক ইরানের কারাগারে বন্দি। এদের মধ্যে ৩৪ জনই সেপ্টেম্বরে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর পর শুরু হওয়ার বিক্ষোভ কারণে গ্রেফতার হয়েছেন। চীনে সবচেয়ে বেশি গণমাধ্যমকর্মী কারাগারে রয়েছে। হংকংসহ, চীনে ১১০ জন গণমাধ্যমকর্মী আটক রয়েছে।
মিয়ানমারে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সাংবাদিকতা কার্যকরভাবে একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বর্তমানে ৬৩ জন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের আটজনসহ ১৮ জন গণমাধ্যমকর্মী বর্তমানে রাশিয়ায় বন্দি। রাশিয়ায় সব স্বাধীন মিডিয়া কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আরএসএফ মহাসচিব ক্রিস্টোফ ডেলোয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করে তাদের কারাগারগুলি আগের চেয়ে দ্রুত পূর্ণ করছে’।
সারা বিশ্বে কারাবন্দি গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। বাকি দুই-তৃতীয়াংশ বিনা বিচারে কারাগারে আটক রয়েছেন। আরএসএফ জানিয়েছে, এদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
কারাগারে নারী সাংবাদিকের সংখ্যাও বিশ্বব্যাপী সর্বকালের সর্বোচ্চ। ২০২১ সাল থেকে ৬০ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৭৮-এ পৌঁছেছে। আরএসএফ সোমবার ইরানি সাংবাদিক নার্গেস মোহাম্মদীকে পুরস্কার প্রদান করেছে। যিনি গত এক দশক ধরে বারবার কারাবরণ করেছেন।