চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। সূত্র: রয়টার্স।
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে চীনের সৈন্যদের সাথে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের পর সীমান্ত পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে চীন। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গত শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষেই সেনারা আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর চীন এই প্রথম এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করল।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন মঙ্গলবার বলেছেন, “আমরা যতদূর বুঝতে পারছি, চীন-ভারত সীমান্ত সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল।” দু’পক্ষই কূটনৈতিক এবং সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে সীমান্ত নিয়ে অবাধ আলোচনা করেছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত ৯ ডিসেম্বরে ভারতীয় সেনারা চীনের সেনাদের ভারতীয় ভূখন্ডে ঢুকে পড়া ঠেকিয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অরুণাচল প্রদেশে চীনা ও ভারতীয় সৈন্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের সৈন্যরা আহত হয়েছেন। সীমান্তে সংঘর্ষের এই ঘটনা কূটনৈতিকভাবে চীনের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভারতের এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
২০২০ সালের জুলাই মাসে গালওয়ানের পর এই প্রথম মুখোমুখি সংঘাতে জড়াল দুই দেশের সেনাবাহিনী। সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা ও চার চীনা সেনা নিহত হয়েছিলেন। গালওয়ানের ঘটনার পর থেকে একাধিকবার বৈঠকে বসেছেন দুদেশের সেনাকর্তারা। তবে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি।
শুক্রবারের সংঘর্ষের পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রগুলো দাবি করে, তাদের অন্তত ছয় সেনা আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের পর তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষের সেনারা ওই এলাকা থেকে সরে যায় এবং এর পরপরই ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে’ উভয়পক্ষের কমান্ডাররা বৈঠকে করেন বলে জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
চীন ও ভারতের মধ্যে ৩৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরোধপূর্ণ সীমান্ত আছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নামের এই সীমান্ত দুর্বলভাবে চিহ্নিত করা।
তাওয়াং সীমান্তে ২০০৬ সাল থেকে চীন এবং ভারতীয় সেনাদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কিছু এলাকাকে উভয় পক্ষই তাদের নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। এসব এলাকায় উভয় পক্ষের সৈন্যরাই টহল দেয়। ২০২১ সালে অক্টোবর মাসেও ওই এলাকাতে ঢুকে পড়েছিল বহুসংখ্যক চীনা সেনা।