অদম্য বাঙালিকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে হানাদার ও তাদের দোসররা। ছবি: সংগৃহীত
বান্দরবানের কালাঘাটা, ডলুপাড়া, ক্যা নাই জ্যু পাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়।
অবশেষে ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করলে, ১৪ ডিসেম্বর শহরের মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে (বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস) লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে বিজয়োল্লাস করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্ত হয় বান্দরবান।
পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিহত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাঘা বাবলুর নেতৃত্বে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ভূঁইডোবা সীমান্ত অতিক্রম করে দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার দল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজয় স্বীকার করে জেলা সীমানা ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদাররা।
মুক্তিযোদ্ধাদের দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা (প্রয়াত) আব্দুল মোতালেবের নেতৃত্বে পাঁচবিবি উপজেলা সদরে পৌঁছে পুলিশ স্টেশনে (থানায়) প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দেন। অন্যদিকে পায়ে হেঁটে বিকেলে জয়পুরহাট জেলা শহরে পৌঁছে ‘পুরনো ডাক বাংলো’ চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (প্রয়াত) বাঘা বাবলু স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ান।
৯ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ শহরকে পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত করার জন্য সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের শৈলাবাড়ী পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে হামলা করে মুক্তিযোদ্ধারা। শহীদ হন সুলতান মাহমুদ।
১১ ও ১২ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা শহরকে হানাদার মুক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। তিনদিক থেকে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধারা। রাত তিনটা পর্যন্ত প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকিস্তানি সেনারা ট্রেনে করে ঈশ্বরদীর দিকে পালিয়ে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে শহরের ওয়াপদা অফিসে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রধান ক্যাম্পও দখলে নেন মুক্তিযোদ্ধারা। ওইদিন কওমী জুটমিল (বর্তমানে জাতীয় জুটমিল), মহুকুমা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে উড়িয়ে দেওয়া হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। মুক্ত হয় সিরাজগঞ্জ।