প্রতিষ্ঠার দুই দশকেও নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়নি যুব মহিলা লীগে। এমনকি হয়নি নিয়মিত সম্মেলনও। এবার নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং ও পাপিয়া কাণ্ডে আলোচিত এই সংগঠনটির নেতৃত্বে পরিবর্তন আসছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংগঠনটির তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে আসতে পারে নতুন নেতৃত্ব।
তবে এটিই একমাত্র সংগঠন যার সভাপতি-সম্পাদক পদে কোনো প্রার্থিতা ঘোষণা বা এ নিয়ে প্রকাশ্য দৌড়ঝাঁপ নেই। এমনকি যুব মহিলা লীগের নেতৃত্বে আসতে চান এমন কেউই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। সংগঠনটির সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরও সাড়া পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেত্রী জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠার ২০ বছরে মাত্র দুটি সম্মেলন করেছে যুব মহিলা লীগ। প্রতিষ্ঠাকালীন নেতৃত্ব দিয়েই চলছে সংগঠন। এখানে কারও সভাপতি-সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা নেই। ভেতরে ভেতরে বা মৌখিক প্রার্থী হলেও অনেকে প্রকাশ করছেন না। কারণ আবারও এই নেতৃত্ব রয়ে গেলে পরে সাইজ করে দেওয়ার আশঙ্কা আছে।
তবে এবার সম্মেলনে নেতৃত্ব পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
যুব মহিলা লীগের বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিক প্রার্থী হওয়ার প্রক্রিয়া না থাকলেও এবার সভাপতি হতে চান বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, আলেয়া সারোয়ার ডেইজী, জাকিয়া পারভীন খানম, আদিবা আঞ্জুম মিতা এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন।
পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক হতে চান সহ-সভাপতি শিরিনা নাহার লিপি, আফরোজা মনসুর লিপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেদ্দা পারভীন রিমি ও শাহনাজ পারভীন ডলি, আইনবিষয়ক সম্পাদক নাভানা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি ও মাহফুজা রিনা।
সভাপতি পদপ্রার্থী কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি বলেন, যুব মহিলা লীগ সৃষ্টি করেছেন নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা)। দেখভালও তিনিই করেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা সেটা মাথা পেতে নেবো।
বিদায়ী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক তানিয়া সুলতানা হ্যাপি বলেন, নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) সংগঠন। নেত্রীই বুঝবেন কাদের সামনে এগিয়ে নেবেন। সেটা হয়তো আমিও হতে পারি। অন্য কেউও হতে পারে। আমরা কেউই এখন বলতে পারছি না। তবে যেহেতু আমাদের ত্যাগ আছে, আমার একটা মাত্র ভাই, সেও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে ছাত্রলীগ করতে গিয়ে। নেত্রী সবই জানেন। নেত্রীর ওপরই ভরসা।
২০০২ সালের ৬ জুলাই গঠিত হয় যুব মহিলা লীগ। সেসময় নাজমা আক্তারকে আহ্বায়ক ও অপু উকিলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের কমিটি করা হয়। সংগঠনটির প্রথম সম্মেলন হয় ২০০৪ সালে। এতে নাজমা আক্তারকে সভাপতি ও অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
তিন বছর পর পর সম্মেলন করার বিষয়ে গঠনতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও ১৩ বছর পর হয় দ্বিতীয় সম্মেলন। ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ যুব মহিলা লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে নাজমা আক্তার ও অপু উকিল ফের নেতৃত্বে আসেন।