এবার আসল ফাইনালের দিকে চোখ মেসির
কাতারে ফেবারিট হিসেবেই পা রেখেছিল আর্জেন্টিনা; কিন্তু প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত হারে খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিল দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে একের পর এক বাঁচা-মরার লড়াই পেরিয়ে এখন ফাইনালে আর্জেন্টিনা। দলকে ফাইনালে তুলে উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক লিওনেল মেসি জানালেন, পাঁচটি ‘ফাইনাল’ জয়ের পর এবার তাদের চোখ আসল ফাইনালের দিকে।
আট বছর আগে মারাকানার মাঠের ফলটা নতুন করে বদলে দেয়ার সুযোগ নেই আর। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরে শিরোপার দিকে লিওনেল মেসির ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকার ছবিটা আজও সমর্থকদের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়। তবে অপূর্ণতা দূর করার আরও একটি সুযোগ মেসির সামনে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) লুসাইল স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা।
আসরে প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে ১-২ ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনা এতদূর আসতে পারবে তা খুব বেশি লোক কল্পনাও করতে পারেনি। এ হারে আলবিসেলেস্তেদের জন্য প্রতিটি ম্যাচ হয়ে ওঠে নকআউট। যেখানে টানা পাঁচ জয়ে এখন ফাইনালের মঞ্চে লিওনেল স্ক্যালোনির দল।
ফিনিক্স পাখির মতো আর্জেন্টিনার এ জেগে উঠতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার জয় পাওয়া পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে যৌথভাবে আছেন সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায়। গোল ছাড়াও আছে ৩টি অ্যাসিস্ট।
১৯৮৬ সালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার একক নৈপুণ্যে জেতা বিশ্বকাপটা হয়ে আছে তাদের শেষ বিশ্বকাপ। এরপর ৩৬ বছর ধরে শুধুই আশাভঙ্গের গল্প। লিওনেল মেসি বলছেন, প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে হারটাই তাদের শক্তিশালী করে তুলেছে।
মেসি বলেন, ‘আমি বলব, প্রথম ম্যাচট বড় ধাক্কা ছিল আমাদের জন্য; কারণ তার আগে আমরা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত ছিলাম। বিশ্বকাপের শুরুতে আমরা সৌদি আরবের কাছে হেরে যাব ভাবিনি।’
হার দিয়ে শুরু করা টুর্নামেন্টে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মেসিরা। তবে নিজেদের শক্তির বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন তিনি ও তার সতীর্থরা। জয়ের বিকল্প যে কিছু ছিল না তাও জানা ছিল। তাই প্রতিটি ম্যাচকে ফাইনাল হিসেবে ধরেই মাঠে নেমেছিলেন তারা।
তিনি বলেন, ‘পুরো দলের জন্য এটি ছিল অগ্নিপরীক্ষা। আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা কতটা শক্তিশালী। আমরা অন্য ম্যাচগুলো জিতেছি। আমরা যা করেছি, তা খুব কঠিন ছিল। প্রতিটি ম্যাচই ছিল ফাইনাল। আমরা জানতাম, যদি জিততে না পারি তাহলে সব শেষ।’
ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে আর্জেন্টিনা পাচ্ছে ফ্রান্স কিংবা মরক্কোকে। প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, ১৮ ডিসেম্বর লুসাইলে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী মেসি।
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা পাঁচটি ‘ফাইনাল’ জিতেছি। আশা করি, রোবারের ফাইনালের ক্ষেত্রেও তাই হবে। আমরা সূক্ষ্ম ভুলের কারণে প্রথম ম্যাচে হেরেছি; কিন্তু সেটাই আমাদের শক্তিশালী হতে সাহায্য করেছে।’
উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মরক্কোর মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স।