ফাইনালে মেসিকে নিয়ে বাড়তি ভাবনায় ফ্রান্স
মরক্কোকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠা ফ্রান্সের সামনে সুযোগ ইতালি ও ব্রাজিলের রেকর্ডে ভাগ বসানো। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলেই তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে দিদিয়ের দেশমের দল।
কাজটা যে সহজ হবে না তা ভালোমতোই জানা আছে ফ্রান্সের অধিনায়ক হুগো লরিসের। আর্জেন্টিনা দলে আছেন মেসির মতো জাদুকর। ফাইনালে তাই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস তার কণ্ঠে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। চার বছর আগে রাশিয়ায় ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জেতা ফ্রান্সের সামনে এবার প্রতিপক্ষ লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। টানা দ্বিতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করা ফ্রান্স যদি লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারে তবে ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব দেখাবে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতালি প্রথম এ কৃতিত্ব দেখায়। পরে ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপ জিতে তাদের রেকর্ডে ভাগ বসায় ব্রাজিল।
ফ্রান্সের কাজটা অবশ্য খুব একটা সহজ হচ্ছে না। ফাইনালে প্রতিপক্ষ যে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করা আলবিসেলেস্তেরা এর পর প্রতিটা ম্যাচ খেলেছে ফাইনালের মতো। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে নিশ্চিত করেছে ফাইনাল। টুর্নামেন্ট যত এগিয়েছে আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্সের ধারও বেড়েছে তত। ফাইনালে উঠার পথে মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। দারুণ ছন্দে আছেন লিওনেল মেসি।
ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা দুর্দান্ত ফুটবল খেলা আর্জেন্টিনাকে নিয়ে ফাইনালে নির্ভার থাকতে পারছে না ফ্রান্স। বিশেষ করে লিওনেল মেসিকে নিয়ে বাড়তি ভাবনার চাপ ব্লুদের অধিনায়ক লরিসের কপালে। মরক্কোকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর তাই সতর্কতার সুর লরিসের কণ্ঠে: ‘আর্জেন্টিনা অনেক বড় দল। কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে, সেটা তারা দেখিয়েছে। আর মেসির মতো একজন খেলোয়াড় আছে তাদের, ফুটবল খেলাটায় যে ছাপ সে রেখে দিয়েছে। একটা দারুণ ম্যাচ হওয়ার সব উপকরণই আছে ফাইনালে। সবকিছু নিজেদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করব আমরা।’
আর্জেন্টিনার মতো ফ্রান্সও পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে গ্রুপ পর্বে। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করা ফ্রান্স গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে হেরে যায় তিউনিসিয়ার কাছে। এরপর শেষ ষোলোয় পোল্যান্ড, কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড ও সেমিফাইনালে মরক্কোকে হারিয়েছে তারা।
মরক্কোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের দিনে প্রথম গোলটি করেন ডিফেন্ডার থিও হার্নান্দেজ। অপর গোলটি করেন বদলি হিসেবে নামা রান্দাল কোলো মুয়ানি। উসমান দেম্বেলের বদলি হিসেবে নামার মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যে গোলটি করেন তিনি। বুন্দেসলিগার ক্লাব আইন্ট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের ২৪ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ডের তর সইছে না আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামার। ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করি আমরা শেষ পা-ও ফেলতে পারব। ফাইনাল শুধু খেলার জন্য খেলা নয়, ফাইনাল মানে জেতার ম্যাচ। জয়ের ক্ষুধা আর প্রত্যয় নিয়েই খেলব আমরা।’