ফাইল ছবি
কাতারে তৃতীয় শিরোপার হাতছানি আর্জেন্টিনার সামনে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। এর আগে ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপা ওঠেনি আলবিসেলেস্তেদের হাতে। এবার লিওলেন মেসিদের নিয়ে বেশ আশাবাদী সমর্থকরা। তবে ফলাফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তার আগে দেখে নেয়া যাক ফাইনালে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের অতীত ইতিহাস।
কাতার বিশ্বকাপে অঘটন দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল আর্জেন্টিনার। সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের পর, কেউ ভাবতেই পারেনি এ দলটা খেলবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের’ ফাইনালে। তবে সে হারের পর মার্টিনেজ-মেসিরা পণ করেছিল, এরপরের প্রত্যেকটি ম্যাচকে ফাইনাল ধরে নিয়েই মাঠে নামবেন তারা। অর্থাৎ হারলেই বিদায় নিতে হবে তাদের।
আলবিলেস্তেরা তাদের ফাইনাল ম্যাচে একে একে হারিয়েছে মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও ক্রোয়েশিয়া। টানা পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত মেসিদের শিরোপা জিততে হলে খেলতে হবে আরও একটি ফাইনাল। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। মধ্যপ্রাচ্যে শেষ ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে আর্জেন্টিনাকে স্বস্তি দিচ্ছে ফরাসিদের বিপক্ষে তাদের অতীত পরিসংখ্যান। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার দেখা হয়েছে মোট তিন বার। এর মধ্যে আর্জেন্টিনার দুই জয়ের বিপরীতে ফরাসিরা জিতেছে একবার।
তবে ফিফা বিশ্বকাপে ফাইনালের পরিসংখ্যান খুব একটা স্বস্তি দিচ্ছে না আলবিসেলেস্তেদের। এর আগে পাঁচ বার ফাইনাল খেলে তিনবারই শিরোপা খুঁইয়েছে আর্জেন্টিনা। ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে আর্জেন্টিনা প্রথম ফাইনাল খেলে ১৯৩০ সালে। সে আসরে স্বাগতিক উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথমার্ধের খেলা শেষে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ৯০ মিনিটের খেলা শেষে ৪-২ গোলের হার নিয়ে মাঠতে ছাড়তে হয় তাদের।
প্রথম আসরে শিরোপা খোঁয়ানো সে দুঃখ বয়ে বেড়ায় দীর্ঘ ৫৭ বছর। অবশেষে ১৯৭৮ মারিও কেম্পেস এসে লেখেন রূপকথা। অবসান হয় আর্জেন্টিনার প্রায় ছয় দশকের অপেক্ষা। ঘরের মাটিতে ওই আসরের ফাইনালে কেম্পেসের জোড়া গোলের বরাতে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে হারায় আলবিসেলেস্তেরা। এক আসর বিরতি দিয়ে ১৯৮৬ সালে আবার ফাইনাল খেলে আর্জেন্টিনা। এবার মেক্সিকোর মাটিতে ম্যারাডোনার নেতৃত্বে শক্তিশালী পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলে তারা।
পরের বছর ম্যারাডোনারা আবার ফাইনালে পা রাখে। ১৯৯০ সালে ইতালির ওই আসরে আর্জেন্টিনার স্বপ্নভঙ্গ হয় ম্যাচের ৮৫ মিনিটে। আগের আসরের প্রতিশোধ তুলে এবার ১-০ গোলের জয় তুলে নেয় পশ্চিম জার্মানি।
এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২৪ বছর পর ফের শিরোপার লড়াইয়ে ফাইনালে পা রাখে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে ১৯৯০ সালের দুঃখ ভোলার অপেক্ষায় ছিল সমর্থকরা। কিন্তু এবারও আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। নির্ধারিত খেলার সময় শেষে অতিরিক্ত সময়ের ২৩ মিনিটে মারিও গটশে নামক দুঃস্বপ্ন তাদের হাত থেকে শিরোপা কেড়ে নিয়ে জার্মানিকে উপহার দেয়।
ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে গটশের দেয়া সে দুঃখ ভুলতে আট বছর পর কাতারে আবার সুযোগ এসেছে আর্জেন্টিনার সামনে। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে উড়তে থাকা আলবিলেস্তেদের ৩৬ বছরের দুঃখ ঘোচানোর পথে এবার বাধা গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। আগামী ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে নির্ধারণ হবে শিরোপার ভাগ্য।