জাতিসংঘের নারী অধিকার বিষয়ক কমিটি থেকে বাদ পড়েছে ইরান। পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটিতে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে দমন-পীড়নের জেরে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সংস্থাটি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড স্যোশাল কাউন্সিলের এক ভোটাভুটিতে ইরানকে ওই কমিটি থেকে বাদ দেয়ার পক্ষে ভোট দেয় বেশিরভাগ সদস্যরাষ্ট্র। এদিকে নারী অধিকার বিষয়ক কমিটি থেকে বাদ দেয়ায় জাতিসংঘের তীব্র সামলোচনা করে একে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে উল্লেখ করেছে তেহরান।
গেল সেপ্টেম্বরে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের রাজধানী তেহরানে পুলিশের হাতে আটক হন কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনী। আটকের তিনদিনের মাথায় পুলিশি হেফাজতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় ওঠে ইরানসহ গোটাবিশ্বে। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী তেহরান। হিজাববিরোধী সহিংস বিক্ষোভ এক পর্যায়ে রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।
বিক্ষোভ দমনে একসময় চড়াও হয় সরকার। নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগে প্রাণ হারান বহু বিক্ষোভকারী। আহত হন আরও অনেকে। তবুও থেমে নেই আন্দোলন। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের জেরে এবার জাতিসংঘের নারী অধিকার বিষয়ক থেকে বাদ দেয়া হলো ইরানকে। বুধবার জাতিসংঘের ৫৪ সদস্যের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলে ইরানকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার পক্ষে ভোট দেয় ২৯টি দেশ। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৮টি।
এদিকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে মন্তব্য করেছে তেহরান। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘে ইরানের দূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উস্কানি ও তাদের ষড়যন্ত্রেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘গুণ্ডামির’ অভিযোগও আনেন ইরানি দূত।
এর আগে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে কেবল তেহরানেই ৪শ’ জনকে কারাদণ্ড দেয় ইরানি প্রশাসন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় অন্তত দুজনের।