গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর তার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (মিরপুর বিভাগ) জসিম উদ্দিন মোল্লা।
ডিসি জসিম উদ্দিন মোল্লা সম্প্রতি বলেন, ওই ব্যবসায়ীকে তারা দুদিন ধরে আটকে রাখে; এরপর চক্রের নারী সদস্যের সঙ্গে ধারণ করে রাখা হয় আপত্তিকর ভিডিও। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এক নারীসহ চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা পেশাদার অপরাধী। জামিনে বেরিয়ে একই অপরাধে জড়ায় তারা।
গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে মিরপুর থেকে এক ব্যবসায়ীকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয় শহীদুল ও রাসেল নামে দুই ব্যক্তি। ওই ব্যবসায়ীকে প্রথমে তারা একটি বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। ছিনিয়ে নেয় সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং একটি এটিএম কার্ড।
কথিত গোয়েন্দা পুলিশের দলটি ব্যবসায়ীর এটিএম কার্ড ব্যবহার ২৩ লাখ টাকার কেনাকাটা করে একদিনেই। আর বুথ থেকে উত্তোলন করে ১ লাখ টাকা। দুই দিন আটকে রাখার পর তারা ছেড়ে দেয় তাকে। ঘটনার ৫ দিন পর মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয় এক নারীসহ তিনজনকে। চক্রের নারী সদস্যকে দিয়ে অপরহরণের শিকার ব্যক্তির সঙ্গে ধারণ করা হয় আপত্তিকর ভিডিও।
জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর এটিএম কার্ড ব্যবহার করে কেনা ১৩টি স্বর্ণের চেইনের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১০টি মোবাইল ফোন ও ১৫টি দামি ঘড়ি। মোবাইল ফোন এবং ঘড়িগুলোও তারা অন্য কারও কাছ থেকে ছিনতাই করেছে।
অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, এ ধরনের অপরাধীরা সব প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত। ফলে জামিনে বের হওয়া তাদের জন্য সহজ কাজ। আর এর ফলেই বাড়ছে এ ধরনের অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, আগের বছরের চেয়ে পরবর্তী বছরে এ ধরনের অপরাধের সংখ্যাটা বাড়ছে। একটা সময় চুরি ও ছিনতাই যারা করত তারাই কিন্তু পরবর্তী সময় অধিক মাত্রায় সংগঠিত হয়ে নানা স্তরে যোগাযোগ করে এ কাজগুলো করছে। তারা দেখছে অল্পতেই আদালত থেকে জামিন পাওয়া যায়। এখন বাংলাদেশে অসংখ্য অপরাধপ্রবণ ব্যক্তি আছে যারা অপরাধ করছে, এ রকম অনেক লোক পাওয়া যাবে, যারা চুরি ছিনতাইয়ে জড়িত। এসব অপরাধ প্রবণব্যক্তি চিন্তা করে একটা অপরাধ করে যদি কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ বা উপার্জন করা যায় তাহলে মন্দ হয় না। আর এ কারণে ৬ মাস জেল খাটতে হবে, তাহলে তেমন কিছুও নয়। এই ধরনের শাস্তি মানসিকভাবে ওই ব্যক্তিরা মেনে নিতে প্রস্তুত।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে এর আগেও রয়েছে একই ধরনের একাধিক মামলা।