ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তার বিষয়ে ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় পিটার হাসের নিরাপত্তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরকে আশ্বস্ত করেছে সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ কথা জানান।
মোমেন বলেন, কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান রুটিন অনুযায়ী স্টেট ডিপাটমেন্টে সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছিলেন। ওরা তারিখও দিয়েছিল। পরে ওরা ফোন করার কথা ছিল। এর মধ্যে ওরা ফোনে জানায় আপনি চলে আসেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে হওয়া ঘটনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা তলব ছিল না।
সেখানে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক ইস্যু আর ঢাকা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে তারা কিছুটা আতঙ্কিত। তখন আমাদের রাষ্ট্রদূত বলেন, উনার আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অবশ্য ঘটনা ঘটার পর আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, শাহীনবাগের ঘটনায় ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। সব কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার।
বিএনপির আমল ছাড়া আর কোনো সময়ে দূতাবাসে হামলা হয়নি বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহীনবাগ এলাকায় বর্তমান সরকারের আমলে গুমের শিকারের অভিযোগ তোলা সাজেদুল ইসলাম সুমনের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন ওই এলাকায় বসবাসরত ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে নির্বিচারে ফাঁসি ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা। তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরেন স্বজন হত্যার খতিয়ান।
এ সময় ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের ব্যানারে বিচার প্রার্থনা সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সংগঠনের সদস্যরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে ৪৫ বছর আগের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন।
ওইদিন দুপুরেই শাহীনবাগের ঘটনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন পিটার হাস। সেখানে তিনি তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা উল্লেখ করে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপপ্রধান মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, ঢাকায় রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।