প্রতি মাসে ৩০০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য রফতানি করে তাক লাগিয়েছেন নীলফামারীর আবুল কাশেম ফেরদৌস। এতে কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন তিনি। আর এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১ হাজার পরিবারের। পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখায় পাচ্ছেন ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড়ও।
নীলফামারী সদরের বাইপাস সড়ক। এ সড়কের পাশে ইটাখোলার বাদিয়ার মোড়ে দেখা মিলবে পাহাড়সম অব্যবহার্য প্লাস্টিকের বোতল,ভাঙ্গা জগ,বালতি, চেয়ার সহ নানা রকম ভাঙ্গাচোরা প্লাস্টিক পণ্যের স্তূপ। যত্রতত্র এসব অপচনশীল পণ্য ফেলে দেয়ার কারণে পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকারক বিষয়ে পরিণত হয়েছিল।
এসব অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকারক প্লাস্টিক পণ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ ও বিদেশে রফতানি করে আবুল কাশেম শুধু নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করার পাশাপাশি বয়ে আনছেন বৈদেশিক মুদ্রা। এসব অব্যবহার্য পণ্য সংগ্রহে যুক্ত রয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের কয়েকশ পরিবার।
আবুল কাসেম ফেরদৌস বলেন, কর্মজীবন শুরু হয় শ্যামপুরে এধরনের প্রক্রিয়াজাত কারখানায় সামান্য ৪ হাজার টাকার বেতনে। চরম দারিদ্র্যতার মাঝেও কাজের প্রতি একাগ্রতার কারণে কিছু দিনের পর বেতন ৮ টাকায় উন্নিত হয়ে ম্যানেজার হন। নিজেকে সফল উদ্যেক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সেখান থেকে কারিগরি ও বাজারজাতকরণের সব বিষয়ে অবগত হয়ে নিজ গ্রামে এসে ২০০৮ সালে শুরু করেন ছোট্ট পরিসরে প্লাস্টিক অব্যবহার্য পণ্য প্রক্রিয়াজাত কারখানা।
সে সময় দেশীয় বাজারে সরবরাহ ছাড়া প্রতি মাসে প্রায় ৫০ টন পণ্য রফতানি করতেন বলে জানান আবুল কাসেম। তিনি বলেন, বর্তামানে রফতানির পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রতিমাসে ২০০ থেকে আড়াইশ টন। এছাড়া ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য এনালগ পদ্ধতির পরিবর্তে হট ওয়াটার ওয়াসিং পদ্ধতির ডিজিটাল মেশিন ইতোমধ্যে আমদানি করে চালু করার অপেক্ষায় আছেন।
পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা হিসেবে ১০ শতাংশ রফতানি শুল্ক ছাড়ের সুবিধা দিচ্ছে সরকার। তবে ব্যতিক্রমী এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারের আরও বেশি সুবিধা দাবি করছেন নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি সহ-সভাপতি রাজ কুমার পোদ্দার। তিনি বলেন, অবশ্যই এধরনের পরিবেশ বান্ধব প্রতিষ্ঠানকে সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া প্রয়োজন।
প্রতি মাসে এধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে উৎপন্ন হওয়া প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন প্রক্রিয়াজাত পণ্য বিদেশে রফতানি হয়। আর দেশে এই পণ্য প্রতি মাসে প্রায় ২০০ টনের মত বেচাকেনা হয়।