বয়স মাত্র ৩০ পার হবার আগেই হাড়ের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। মূলত নারীদের ক্ষেত্রে এ সমস্যার প্রকোপ বেশি। এরপর টেস্ট করলে দেখা যাচ্ছে, দেহে ক্যালসিয়ামের মাত্রা রয়েছে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই কম। ফলে হাড়ের ক্ষয় হচ্ছে দ্রুত গতিতে।
এমন জটিল পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে চাইলে আপনাকে খাবারের মাধ্যমে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতেই হবে। এ খনিজ দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে অনায়াসে হাড়ের নানাবিধ জটিল সমস্যা এড়িয়ে চলা যায়।
তাই তো এমন গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জোগানে ঘাটতি থাকা চলবে না। তবে চিন্তা নেই মশাই, শুধু দুগ্ধজাত খাবার নয়, বরং অন্যান্য কিছু নিরামিষ খাবারেও রয়েছে এই খনিজের ভরপুর উপস্থিতি।
১। ডুমুর
ডুমুর খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার। এত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। গবেষণায় জানা যায়, দুটি ডুমুরে রয়েছে প্রায় ২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই দেহে এই খনিজের ঘাটতি মেটাতে চাইলে এই ফল আপনার প্রথম পছন্দ হতেই পারে। এ ছাড়া মনে রাখবেন, এই ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। তাই প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতেও ডুমুরের জুড়ি মেলা ভার।
২। কেলে শাক
কেলে শাক ক্যালসিয়ামের খনি। ওয়েবমেড জানাচ্ছে, ১০০ গ্রাম কেলে শাকে ১ কাপ দুধের থেকেও বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এ ছাড়া এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ, ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই দেহে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে কেলে শাকের কোনও জুড়ি নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শাক নিয়মিত খেলে হার্টের অসুখ, ক্যানসার ও প্রদাহজনিত নানাবিধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩। সয়াবিন
সয়াবিন আমাদের অনেকেরই প্রিয় খাদ্য। এই খাবার খেতে যেমন সুস্বাদু, ঠিক তেমনই এতে রয়েছে পুষ্টির ভাণ্ডার। এই প্রাকৃতিক উপাদানে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তবে সয়াবিনকে শুধু প্রোটিনের গণ্ডিতে বেঁধে রাখলেই হবে না বরং এই খাবারে অন্যান্য অনেক ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। এমনকি বেশকিছুটা পরিমাণে ক্যালসিয়ামও রয়েছে এই খাবারে। তাই সয়াবিন নিয়মিত খান। এ ছাড়াও সয়াবিন থেকে তৈরি সোয়া মিল্ক, টোফু অথবা মিসো জাতীয় খাবার খেলেও উপকার পাবেন।
৪। ব্রকলি
গত কয়েক বছরে এদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বেই ব্রকলির জনপ্রিয়তা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। সবুজ রঙের এই ফুলকপির হাজার গুণ নিয়ে নিয়মিত গবেষণা চলছে। আর তাতেই উঠে আসছে একের এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১০০ গ্রাম কাঁচা ব্রকলিতে থাকে প্রায় ৪৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই সালাদে কাঁচা ব্রকলি মিশিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়াও মনে রাখবেন, ব্রকলিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। তাই সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক ঘাতক অসুখ নিয়ন্ত্রণে ব্রকলি হতে পারে আপনার প্রধান হাতিয়ার।
৫। কমলালেবু
কমলালেবু আমাদের প্রিয় ফল। এই ফলে রয়েছে ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার। তাই এই ফল যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, এটা এখন প্রায় সকলেই জানেন। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, কমলালেবু কিন্তু ক্যালসিয়ামেরও খনি। একটা গোটা লেবুতে থাকে প্রায় ৬৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই হাড়ের খেয়াল রাখতে চাইলে রোজ একটা করে কমলালেবু খেতেই পারেন।