বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ।
শনিবার (২৭ মে) নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল গনি সাবু সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, চাঁদা না পেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক জনি হাসান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্নব, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম ও শাহীন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে ঢাকা কলেজের নর্থ হলের ১২০ নম্বরে রুমে অপহরণ ও নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার (২৬ মে) অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান বলেন, তিনি সিগমাইন্ড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যায়। রাতে সিয়াম ও রমজান দুই ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানান।
খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে তাকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন ছাত্রলীগ নেতারা। এরপর তৌকির নামে এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠানো হলে তাকে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে মেহেদী ঢাকা কলেজের নর্থ হলে এলে তাকেও জিম্মি করা হয়।
ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এসময় তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়া হয়। রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদীর অবস্থা বেগতিক দেখে শুক্রবার (২৬ মে) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বের করে নিউ মার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে কৌশলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় নিউ মার্কেট থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী বাদী হয়ে জনি হাসান, এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।