আগামী দিনে বিশ্বের তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এতটাই বাড়বে যে, তা নতুন রেকর্ডও গড়তে পারে। তাই প্রতিটি দেশকে এমন চরম আবহাওয়া মোকাবিলায় অগ্রিম প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিশ্বজুড়ে এল নিনোর প্রভাবের পূর্ব সতর্কতা হিসেবে এই আহ্বান জানিয়েছে।
এল নিনো হলো প্রশান্ত মহাসাগরের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের একটি প্রাকৃতিক জলবায়ু প্যাটার্ন যা সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়িয়ে দেয় এবং এর ফলে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া অনেকটাই বদলে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই ঘোষণা আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের বাস্তুতন্ত্র এবং আমাদের অর্থনীতিতে এল নিনোর প্রভাব কমিয়ে আনতে প্রস্তুতি নিতে হবে। এটি বিশ্বের সরকারগুলোর জন্য একটি পূর্ব সংকেত। জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে হলে সরকারকে অবশ্যই আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এই বছর আরও আবহাওয়া সংক্রান্ত বিপর্যয়কর ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিগত কয়েক বছর ছিল এল নিনোর প্রস্তুতি পর্যায়। এই পর্যায়কে বলা হয় লা নিনা। লা নিনার সময় সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা তুলনামূলক ঠান্ডা থাকে। তারপরও এই পর্যায়েই চলতি বছর যে পরিমাণ গরম পড়েছিল সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, আগামী দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়বে।
এল নিনোর প্রভাব এবং মানুষের সৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বিশ্বের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ২০১৬ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর। কিন্তু মানবসৃষ্ট কারণ এবং বর্তমানে চলমান এল নিনোর প্রভাবে ২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালে ২০১৬ সালের তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার। সংস্থাটির মতে, ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে যে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়াংশে এল নিনোর প্রভাব অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এল নিনোর কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণাংশ, দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্র, হর্ন অব আফ্রিকা এবং মধ্য এশিয়ায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত বয়ে আনবে। তবে এল নিনোই আবার দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাংশে খরার কারণ হতে পারে।
এছাড়া মহাসাগরগুলোতে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ভারতে কমে যেতে পারে ধানের উৎপাদন।