নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা। ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনকে এবার নিষিদ্ধ ও বহুল বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা বা গুচ্ছ বোমা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের চলমান পাল্টা অভিযান জোরদার করতে ভয়াবহ এ অস্ত্র দেয়া হচ্ছে। এই বোমায় বহু বেসামরিক নাগরিক হত্যার রেকর্ড থাকায় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তবে এসব সমালোচনায় কান দিচ্ছে না জো বাইডেন প্রশাসন।
গণবিধ্বংসী হওয়ায় ২০০৮ সালে ‘কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশন’ চুক্তির মাধ্যমে এই মারণাস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়। এ সময় ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১০৭টি দেশ।
তবে এখন পর্যন্ত এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি বেশ কিছু দেশ। তার মধ্যে অন্যতম হল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইসরাইল, ভারত, পাকিস্তান ও ব্রাজিল। মূলত এসব দেশের হাতেই বেশিরভাগ ক্লাস্টার বোমা রয়েছে।
ক্লাস্টার বোমা বা গুচ্ছ বোমা খুবই ভয়ানক। বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে এই বোমার কুখ্যাতি রয়েছে। ব্যবহারের পর এই বোমা অনেক সময় বিস্ফোরিত হয় না।
পরবর্তীতে এর সংস্পর্শে এলে এটি বিস্ফোরিত হয় এবং তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই বোমা চেয়ে আসছে ইউক্রেন।
এক বছরেরও বেশি সময় পর ক্লাস্টার বোমার সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভকে এই বোমা দেয়ার ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবিস্ফোরিত বোমার কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতে পারে—এমন ভাবনা থেকে ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা সরবরাহের বিষয়টি দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়েছিল।
শুক্রবার (৭ জুলাই) হোয়াইট হাউসের এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বেসামরিক মানুষের সম্ভাব্য ক্ষতি কমিয়ে আনার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া যুদ্ধে রাশিয়াও ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে এই অস্ত্র দিক বা না দিক, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
জ্যাক সুলিভান আরও বলেন, অন্য দেশের ভূখণ্ডে এই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউক্রেন। শুধু নিজেদের সীমানায় পাল্টা অভিযান চালাতে এটা ব্যবহার করবে ইউক্রেনীয় সেনারা।
এখন ইউক্রেনকে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যেসব ক্লাস্টার বোমা মজুদ আছে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের তুলনায় রাশিয়ার কাছে ক্লাস্টার বোমার মজুদ বেশি রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি।