সাবেক আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল এবং সাবেক সদস্য সচিব মহসিন মিয়া হৃদয়। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়কের ওপর হামলার ঘটনায় সদ্য সাবেক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কার বিষয়ে সাবেক আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল বলেছেন, বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। এতে কোনো সমস্যা নেই।
শুক্রবার (০৭ জুলাই) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়।
সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল এবং সাবেক সদস্য সচিব ও সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহসিন মিয়া হৃদয়কে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এই বহিষ্কারাদেশ অনুমোদন করেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল জানান, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আহ্বায়ক করে রাতের আধারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের কমিটি দেয়া হয়েছে। এর নেপথ্যে সব করেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও লন্ডন প্রবাসী আব্দুর রহমান ভূঁইয়া সানির ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার বড়ভাই কবির আহমেদ ভূঁইয়া। ফলে এ কমিটিকে মেনে নিতে পারেনি তৃণমূল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ফলে তাদের সব জায়গায় প্রতিহত করা হচ্ছে।
আর বহিষ্কারের বিষয়ে ফুজায়েল বলেন, ‘এরইমধ্যে জানতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। এতে কোনো সমস্যা নেই। পদ নিয়ে ছাত্রদল করতে হবে এমনটি মনে করি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ জুন মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেন। কমিটিতে শাহীনুর রহমানকে আহ্বায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি জেলা ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরী ও সদস্য সচিব মহসিন মিয়াসহ পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এরই জেরে তারা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক, যুগ্মসম্পাদক ও নবগঠিত ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালায়। এ নিয়ে জেলা শহরের একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলাগুলি হয়। এরই প্রেক্ষিতে শহরের লোকনাথ দীঘির পাড় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় উভয় পক্ষ। পরে নবগঠিত কমিটির নেতারা শহরতলীর বিরাসারে কর্মসূচি করতে চাইলে সেখানে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
এ ঘটনার ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগরের নবনির্মিত শেখ হাসিনা সড়কের শিমরাইলকান্দি এলাকায় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমানের ওপর হামলা করা হয়। হামলার নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল ও সদস্য সচিব মহসিন মিয়া। এ সময় তিতাস নদীর পানিতে নেমে আত্মরক্ষা করেন আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান। তবে তার সঙ্গে থাকা বিশাল (২৮) নামের এক কর্মী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন জানান, এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে পুলিশ আসার আগেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে শটকে পড়ে। তাদের ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছেন বলে জানান তিনি।