প্রায় ১১ বছর পর মিরপুরে ফেরার দিনে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০০ রানের আগেই ভারতীয়দের আটকে দিয়ে সিরিজে ফেরার জোরাল আভাস দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ নারী দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচে অধিনায়ক জ্যোতির বিদায়ের পর শেষ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২-০ তে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দিয়ে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। এরপর টাইগ্রেস স্পিনার সুলতানা খাতুনের তিন শিকারে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ৯৫ রানের নড়বড়ে সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশও। তবে ব্যক্তিগত ৩৮ রানে অধিনায়ক জ্যোতি আউট হওয়ার পরই খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৮ রানে হেরেছে তারা।
এদিন শুরু থেকেই সাবধানী ঢঙয়ে খেলতে থাকে সফরকারীরা। কিন্তু পঞ্চম ওভারে গিয়েই হোঁচট খায় আগের ম্যাচের জয়ীরা। ক্রমেই পরপর দুই ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় হারমনপ্রীত কৌরের দল। পানি পানের বিরতির আগেই টপ-অর্ডারের ৪ উইকেট খুইয়ে বসে তারা।
এর আগে, ওপেনিং জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন স্মৃতি মান্দানা এবং শেফালি ভার্মা। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার নাহিদা আক্তারের বলে আউট হয়ে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ফিরেন মান্দানা। এরপর শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা ওপেনার শেফালিকে ফেরান সুলতানা খাতুন। সোবহানার তালুবন্দী হওয়ার আগে ১৪ বলে ১৯ রান করেন শেফালি।
এরপর ক্রিজে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই সুলতানার বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ভারতীয় অধিনায়ক হারমনপ্রীত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বড় রান সংগ্রহের পথ রুদ্ধ হয়ে যায় ভারতীয়দের। শেষ দিকে আমানজোত করের ১৪ ও দীপ্তির ১০ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ৯৬ রানের লক্ষ্য দাঁড় করিয়েছিল ভারতীয়রা।
বাংলাদেশের হয়ে সুলতানা তিনটি, ফাহিমা দুটি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া মারুফা আক্তার, রাবেয়া খান ও নাহিদা আক্তার একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্রুতই উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। অল্প পুঁজিতে টাইগ্রেসদের চেপে ধরে ভারতীয়রা।
তবে সিরিজে ফেরার স্বপ্ন ঠিকই বুনেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পাশে একমাত্র উজ্জ্বল নক্ষত্র অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ফেরার পরই সবকিছু ভেস্তে যায়।
শেষ দিকে বাংলাদেশের ৮ বলে প্রয়োজন ছিল ১০ রান। মনেই হচ্ছিল, এই ম্যাচে জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু তখনই জ্যোতি ফিরলে হারের শঙ্কা জাগে। শেষ পর্যন্ত তাই সত্যি হয়েছে। টাইগ্রেসদের অন্যতম এই ব্যাটিং ভরসা আউট হয়ে গেলেই শেষ হয়ে যায় টাইগ্রেসদের জয়ের স্বপ্ন।
সহজ জয়ের লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে জ্যোতি ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি। যা কিনা বাংলাদেশের হারের অন্যতম কারণই বলা যেতে পারে। জ্যোতির পর সর্বোচ্চ ৭ রান করেছেন স্বর্ণা। এ ছাড়া রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন বাংলাদেশের টেল অ্যান্ডারের তিন ব্যাটার মারুফা, ফাহিমা ও রাবেয়া। অন্যদিকে অতিরিক্ত খাত থেকেই ১৮ রান পেয়েছে বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে শেফালি ও দীপ্তি তিনটি করে এবং মিন্নু মানি দুটি ও আনুশা একটি উইকেট শিকার করেছেন।