রাজনৈতিক ফায়দা নিতে গাজীপুরের শ্রমিক ফেডারেশন নেতার মৃত্যু নিয়েও অপতৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। এমনকি ‘টাকার প্রলোভন’ দেখিয়ে শহিদুলকে বিএনপির লোক বানানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পরিবারের।
আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার পরও নিহত শহিদুলকে বিএনপিকর্মী বানিয়ে ‘বহির্বিশ্বে’ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চক্রান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।
টঙ্গীর সাতাইশ এলাকার সোয়েটার কারখানার সামনে গত ২৫ জুন সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম। পরিবারের দাবি, শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে কাজ করতে গিয়ে কারখানা মালিকদের ইন্ধনেই খুন হয়েছেন তিনি। তবে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের তৎপরতা দেখে, রাজনৈতিক ফায়দা নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে বিএনপি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে বহির্বিশ্বে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নিহত শহিদুলকে নিজেদের লোক বলে প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি। হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামনের সারিতেই দেখা গেছে গাজীপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের।
নিহত শহিদুলের স্ত্রী কাজলী আক্তার জানান, কয়েকদিন আগে যুবদল ও শ্রমিকদল নেতাকর্মী পরিচয়ে তাদের বাড়িতে যান অর্ধ শতাধিক লোক। এ সময় তাকে বিএনপির লোক হিসেবে উল্লেখ করতে কাজলী বেগমকে অনুরোধ করা হয়। পরে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে শহিদুলকে বিএনপির কর্মী বানানোর চেষ্টাও করে শ্রমিকদলের নেতারা। এতে রাজি হলে, গাজীপুরে বড় আন্দোলন গড়ে তোলার আশ্বাস দেয়া হয়। একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারানোর মধ্যে বিএনপির এমন অপরাজনীতিতে ক্ষুব্ধ পরিবার।
বুধবার (১২ জুলাই) গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ সদস্য শ্রমিক নেতার স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরপর গাজীপুরে রাজনৈতিক মহলে চলে সমালোচনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতির পাশাপাশি রাজাবাড়ি ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শহিদুল।
সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত যে মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত তার একটি দৃষ্টান্ত এ ঘটনার মাধ্যমে পাওয়া গেছে।
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ জানান, নির্বাচন সামনে রেখে দেশবিদেশে নানা চক্রান্ত চলছে বিএনপি জামায়াত জোটের। শহিদুল হত্যাকাণ্ড নিয়েও ফায়দা নিতে চায় দলটি। বিশেষ করে, শ্রমিক নেতাকে নিজেদের দলের লোক পরিচয় দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সংগঠনগুলোকে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা হিসেবেই দেখছেন তারা।
এদিকে শহিদুল হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে একজন শ্রমিক নেতাও রয়েছেন। হত্যাকাণ্ড তদন্তে মাঠে কাজ করছে শিল্পপুলিশের ৩ সদস্যের একটি দল।